অপরাধঅব্যাবস্থাপনাআইন ও বিচারচট্টগ্রামপ্রশাসন

নেশাখোর পুলিশ কনস্টেবল রূপন সেনের প্রতারণার বিচার চেয়ে পুলিশ প্রধানের নিকট পারভিন এর আবেদন

কুমিল্লায় স্বামী পরিত্যক্ত দরিদ্র নারীকে ফুঁসলিয়ে ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ভুয়া এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে মুসলিম পরিচয় দিয়ে এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করে অন্তঃসত্তার পর নির্যাতন আর প্রতারণার অভিযোগে নেশাখোর পুলিশ কনস্টেবল রূপন সেন এর বিচার চেয়ে পুলিশ প্রধানের কাছে আবেদন করলেন ভুক্তভোগী অন্তঃসত্তা নারী পারভিন আক্তার।

দরিদ্র অন্তঃসত্তা নারী জানান আমি পারভিন আক্তার, পিতা-তোতা মিয়া, মাতা- রেহেনা বেগম, গ্রাম-শ্রীভল্লাবপুর, ডাকঘর- আহম্মদনগর, থানা- সদর দক্ষিন, জেলা- কুমিল্লা। তিনি আরো জানান, আমার সাথে ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করা প্রতারকের নাম পুলিশ সদস্য রূপন সেন ( যাহার কনস্টেবল নং ১৬২৪ এবং বিপি নং ৯২১২১৫১৪৭৩  পিতা-সুকুমার সেন, মাতা- মঞ্জু রানী সেন, গ্রাম- জয়পুর, ডাকঘর- জয়পুর, থানা- মিরসারাই, জেলা- চট্টগ্রাম।

ভুক্তভোগী পারভিন বলেন, বিয়েতে ভুয়া এনআইডি কার্ড দিয়ে ব্যবহারকারী প্রতারিত নাম- এহসানুল কবির আজাদ, পিতা- এয়ার মোহাম্মদ। নিকাহ রেজিষ্ট্রার, নারায়ণগঞ্জ। তারিখ- ১৭/১০/২০২৪ খ্রিঃ, বালাম নং-৫/২৪(১৪), পৃষ্টা-৯। প্রভারক রূপন সেন বর্তমানে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সদর দক্ষিন থানা থেকে ক্লোজ হয়ে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে কিছু দিন অবস্থান করার পর এখন শুনেছি বর্তমানে চট্রগ্রাম র‌্যাব – ৭ যোগদান করছেন।

পারভিন বিনয়ের সাথে কাতর হয়ে বলেন আমি একজন অসহায় নারী, আমার পূর্বের মেয়ের মৃত্যুও সুত্র ধরে আমার মেয়ের প্রেম সংগঠিত কারনে আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে থানায় মামলার ঘটনায় আমার মেয়েকে সুরতহাল করতে আসা পুলিশ কনস্টেবল রূপন সেন এর সাথে পরিচয় হয়। এই ঘটনার সুত্র ধরে আমার মেচের মৃত্যুও প্ররোচনাকারীর শাস্তি ও বিচারের আশায় আমার এবং রূপন সেনের মধ্যে মোবাইলে, হোয়াটসঅ্যাপে, ম্যান্সেজারে কথোপকথন শুরু। কথা বলার ছলে বলে কৌশলে ধীরে ধীরে আমি স্বামী পরিত্যক্ত আমার সরলতার সুযোগে রূপন সেন তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে তার নাম এসানুল কবির আজাদ পরিচয়ে ভুয়া এনআইডি কার্ড দিয়ে গত ১৭/১০/২০২৪ইং তারিখে নারায়নগঞ্জের আদালতে তার এক পরিচিত এডভোকেট এর মাধ্যমে ২ লাখ টাকা দেন মোহরানা ধার্য করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর যখন আমি জানতে পারি সে হিন্দু তখন তার সাথে আমি প্রতিবাদ করি এবং দুজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়, তখন রূপন সেন বিষয়টি জানাজানি হবার ভয়ে আমাকে বুঝানোর জন্য সে নিজেকে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ার কনভাট ষ্ট্যাম্পে এভিটডেভিট করছে বলে দেখিয়ে লোক দেখানো মুসলিম এর সুরত ধরে কৌশল অবলম্বন করেন। এর পর আমি তার সাথে সংসার জীবন শুরু করি। এরেই মধ্যে আমার গর্ভে আসে রূপন সেন এর সন্তান। রূপন সেন সন্তান নিতে আগ্রহী ছিলেন না। আমি যেদিন রূপন সে কে আমার গর্ভে সন্তানের কথা বলি ঠিক সেদিন থেকে আমার আর রূপন সেনের মধ্যে শুরু হয় একের পর এক বাক-বিন্ডাতা ঝগড়া মারামারির ঘটনা, ধীরে ধীরে রূপন সিন্নিবাসের ভাড়া বাসায় আসা বন্ধ করে দেন। বাচ্চা নষ্ট করার চাপ দিতে থাকেন আমাকে। কিন্তু বাচ্চা নষ্ট করতে আমি। নারাজ থাকায় সে আমার মোবাইল ফোন নাম্বার গুলা ব্লক করে দেন।

পারভিন আক্তার আরো বলেন,আমি বিয়ের আগে জানতাম না রূপন সেন ফেন্সীডিল, ইয়াবা সেবন ছাড়া সে চলতেই পারেন না ইয়াবা সেবন না করলে সে পাগলের মতো হয়ে যায়। সে প্রতিদিন রুমে এস ইয়াবা সেবন করেন বাঁধা দিলে আমাকে গালিগালাজ সহ এক পর্যায়ে প্রায় সময়ে মারধরও করেন রূপন সেন। আমি যখন রূপনের সাথে ইয়াবা সেবন নিয়ে ঝামেলা শুরু করি তখন রূপন সেন আমাকে কৌশলে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দমকি দিয়ে তার সাথে আমাকে একদিন নেশা করতে বাধ্য করেন এবং গোপনে নেশা করা অবস্থায় রূপন আমার বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও রেকর্ড করে রাখছে তা আমি জানতাম না। বর্তমানে যখন আমার সাথে তার বাচ্চা নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয় তখন সে আমার এই নোংরা ভিডিও আমার কাছের আত্মীয় স্বজনদের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ট করে তাদের দিয়ে বার বার ব্ল‍্যাকমেইল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে গত সপ্তাহে কুমিল্লা সদও দক্ষিন থানায় রূপন সেন, এসআই শিবু সহ অন্য আরেকজন পুলিশ কনস্টেবল মিলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আমাকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তাৎক্ষনিক আমি আমার গর্ভের বাচ্চার কি হবে তা ভেবে আমি তাদের এই প্রস্তাব ভেবে পরে জানাবো বলে আমি থানা থেকে বের হয়ে চলে আসি।

অসহায় পারভিন বলেন, আমি একজন মুসলিম নারী, হিন্দু ধর্মীয় পরিচয়ে গোপন রেখে মুসলিম সেজে আমার সাথে এতো বড় প্রতারণা, বর্তমানে বিয়ে অস্বীকার, আমার গর্ভে তার সন্তান রূপন এমতাবস্থায় আমার অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয়, অধিকার ও তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রূপন সেন এর এমন প্রতারণার জাল থেকে পরিত্রাণ পেয়ে ভবিষ্যতে সুস্থ্য ভাবে জীবন যাপন করতে চাই। আমি তার এমন জগন্য প্রতারণার বিচারের জোর দাবী জানিয়ে পুলিশ প্রধানের নিকট আবেদন করেন বলে জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button