
নিজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ভাবে মাসিক বেতন
ভাতা (এমপিও) সুবিধা গ্রহণ করে আসছে, যদিও প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে কেবল
অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যা এমপিও ভুক্তির
আওতা ভুক্ত নয়।এতে করে সরকারি অর্থের অপব্যবহার এবং নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের
অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ১৪৬/৪ গ্রীণ রোড, ঢাকায় অবস্থিত কলেজটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়। অথচ, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এমপিও ভুক্তির জন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর এবং পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীসহ
পাস কোর্স চালু করা বাধ্যতামূলক। কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর নেই, এবং
“বিএসসি পাস কোর্স” নামক একটি কোর্স চালু থাকলেও সেখানে
শিক্ষার্ক্ষী সংখ্যা অপ্রতুল-গড়ে মাত্র ২ কে ৩ জন। বাস্তবে ওই পাস কোর্সের
শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও একাডেমিক কার্যক্রমও প্রশ্নবিদ্ধ। সরেজমিনে
পরিদর্শনের সময় জানা যায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিএসসি পাস কোর্সে প্রথম
বর্ষে ২ জন, দ্বিতীয় বর্ষে ২ জন এবং তৃতীয় বর্ষে মাত্র ১ জন ছাত্রী ভর্তি রয়েছে,
যাদের কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
অথচ এই নামমাত্র কোর্সের আড়ালে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর সরকার কে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এমপিও সুবিধা
গ্রহণ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন একই ধরনের অন্য গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ
গুলো-যেগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালায়-
এমপিও সুবিধা পাচ্ছে না, সেখানে শুধুমাত্র একটি কলেজের এমপিও সুবিধা
পেয়ে যাওয়া প্রশাসনিক বৈষম্য এবং স্বজনপ্রীতিরই বহিঃপ্রকাশ।ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অধীনে পরিচালিত গার্হস্থ্য অর্থনীতি
ইউনিটের মাধ্যমে যে ছাত্রীরে ভর্তি করানো হয়, তারা মূলত বিএসসি (অনার্স)
কোর্সেই অংশগ্রহণ করে। এই কোর্স গুলো-খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান, শিশু বিকাশ ও
সামাজিক সম্পর্ক, বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়ন শিল্প ইত্যাদি-সরকারি এমপিও কাঠামোর
আওতাভুক্ত নয়। এ বিষয়ে কলেজ কমিটির চেয়ারম্যান এর সাথে ফোনে
যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে অফিসে
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কমিটির চেয়ারম্যান দেশের বাইরে আছেন। বিশেষজ্ঞদের
মতে, এই অব্যবস্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত এবং কলেজটির এমপিও বাতিল করে
ইতোমধ্যে প্রদান করা অর্রে নিরীক্ষা ও পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
অন্যথায়, সরকারি অর্থের অপচয় ও শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্যের সংস্কৃতি অব্যাহত থাকবে।



