হামদর্দ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন চিকিৎসা নিয়ে কিছু কথা

এম এ মান্নান : হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ইন্ডিয়া) হল একটি ভারতীয় ইউনানি ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ফুড কোম্পানি যা ১৯০৬ সালে দিল্লিতে হাকিম হাফিজ আব্দুল মজিদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । এটি তার জনপ্রিয় ইউনানি পণ্যগুলির জন্য পরিচিত, যেমন সাফি, রাঘান-ই-বাদাম শিরিন, সুয়ালিন, জোশিনা এবং সিনকারা। তাদের খাদ্য বিভাগ রূহ আফজার জন্য সর্বাধিক পরিচিত।
হামদর্দ পণ্য কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, হামদর্দ ব্যক্তিগত যত্ন পণ্যগুলি প্রাকৃতিক এবং কোমল উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় এবং সংবেদনশীল ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে, যদি আপনার ত্বকের কোনও নির্দিষ্ট অবস্থা থাকে, তাহলে কোনও নতুন পণ্য ব্যবহার করার আগে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
হামদর্দ কারমিনা:
হাইপার-অ্যাসিডিটি, বদহজমসহ পরিপাকতন্ত্রের গোলযোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক সমাধান।
কারমিনা প্রাকৃতিক উপাদান যেমন- ত্রিফলা (আমলকী, হরিতকী, বহেড়া), আদা, গোলমরিচ, দারচিনি, জৈন, লেবু ও সামুদ্রিক লবণের সমন্বয়ে প্রস্তুত । কারমিনা একটি প্রাকৃতিক ইউনানী ওষুধ যা অম্লাধিক্য (হাইপার-অ্যাসিডিটি), বদহজম, পেটফাঁপা, চুকা ঢেকুর, ক্ষুধামান্দ্য, পেটে গ্যাসজনিত পেটব্যথাসহ পরিপাকতন্ত্রের যাবতীয় গোলযোগ দূর করে। কারমিনা মূলত: পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং পাকস্থলী ও লিভারের কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে পরিপাকতেন্ত্রের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনে ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
কারমিনার উপকারিতা:
১. অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দূর করে: পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ২. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: খাবার দ্রুত ও সঠিকভাবে হজমে সাহায্য করে।
৩. পেটের ব্যথা উপশম করে: পেটের জ্বালা-পোড়া ও পেটব্যথা কমিয়ে দেয়।
৪. বদহজম দূর করে: পেটের ফোলাভাব, গ্যাস, অস্বস্তি ও চুকা ঢেকুর থেকে মুক্তি দেয়।
৫. সম্পূর্ণ ভেষজ উপাদানে তৈরি: কারমিনাতে কোন ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান নেই। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ামুক্ত ও নিরাপদ।
কারমিনার উপাদান:
কারমিনা প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদানের সমন্বয়ে প্রস্তুত, যেমন: ঙ্ আদা (এরহমবৎ): আদাতে বিদ্যমান জিনজারোল পাকস্থলী শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজমে সহায়তা করে, অ্যাসিডিটি দূর করে, বাইল উৎপাদন উদ্দীপ্ত করে। ঙ্ গোলমরিচ (ইষধপশ চবঢ়ঢ়বৎ): খাদ্য হজম ও খাদ্যের পুষ্টি উপাদান শোষনে সহায়তা করে। ঙ্ ত্রিফলা (অসষধশর, ঐধৎরঃধশর ধহফ ইধযরৎধ): পাকস্থলী ও লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও কারমিনাতে অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্রের শক্তি ও কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন গোলযোগ দূর করে।
হামদর্দ হলিস্টিক চিকিৎসা কেন্দ্র:
বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত প্রাকৃতিক সমাধানের জন্য আজই হামদর্দ হলিস্টিক চিকিৎসা কেন্দ্রে আসুন। সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
দীর্ঘ ৩০ বছর পর:
দীর্ঘ ৩০ বছর পর দেশের ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন পেল যথাযথ মূল্যায়ন। রাজধানীর অদূরে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অবস্থিত হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হামদর্দ ইনস্টিটিউট অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক মেডিসিনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদে অধিভুক্ত করা হয়েছে।
ইউনানী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষাসম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্তের জন্য যুগে যুগে গুনি জনেরা হামদর্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
ঐতিহাসিক এই অর্জনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল; হামদর্দ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান; হামদর্দ ইনস্টিটিউট অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক মেডিসিনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, ইউনানী আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রের উন্নয়নের রূপকার, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ড. হাকিম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে উৎসাহিত করে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
আমরা যদি পেছন থেকে হামদার্দ এর কৃতিত্ব বর্ণনা করতে যাই তাহলে দেখা যাচ্ছে যে দীর্ঘ কয়েক বছর পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টির অধীনে ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিসিনকে যুক্ত করায় ইউনানী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা এখন মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে হামদর্দ ইনস্টিটিউট অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ছাড়াও সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ মিরপুর, সরকারি হোমিও মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
তাই দেশের সুনামধন্য আয়ুর্বেদিক মেডিসিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হামদর্দের নাম সু পরিচিত।



