চট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগ

স্মৃতিতে জুলাই” সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পুরস্কার বিতরণী সভায় ডাক্তার শাহাদাত হোসেন

এম এ মান্নান (অপরাধ বিচিত্রা) : গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হবে,,, সিটি কর্পোরেশন মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। গণঅভ্যুত্থান একটি গণআন্দোলনই নয়, এটি একটি পূনর্জাগরণ। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ অর্জন ধরে রাখতে হবে। আজ ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের আজকের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল ‘দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে’ তরুণ প্রজন্ম ও আপামর জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ।

এই বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য। একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনো দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।

তিনি ড়তকাল ৫ আগস্ট (সোমবার) রাত সাড়ে ৯ টায় ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই- ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনী ডক্টর’স এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃক আয়োজিত “জুলাই বিপ্লব উদযাপন” সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান “স্মৃতিতে জুলাই” সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পুরস্কার বিতরণী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরের প্রচেষ্টা। তাই, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন এখন সরকারের মৌলিক দায়িত্ব। ৩১ দফা হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার রূপরেখা। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জুলাই আগস্টের আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু সে আন্দোলনেও সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেখিয়ে দিয়েছেন, তরুণদের অধিকার ক্ষুন্ন হলে, তাদের অবহেলা করা হলে, তাদের দমনের চেষ্টা করা হলে, তারা রুখে দাঁড়াতে জানে, তারা পাথরকে ভেঙে চুরমার করতে পারে। এই তারুণ্যের শক্তিতেই আগামীর বাংলাদেশ বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে।

ডাক্তার তানভীর হাবিব তানহার সভাপতিত্বে ও অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক ডাক্তার আসহাব মেহরাজ আসিফ, চট্টগ্রাম মেডিকেল ড্যাব শাখার সভাপতি ডাক্তার মোঃ জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার ডাক্তার তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, ড্যাব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি ডা: আব্বাস উদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সসদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, এনডিএফ’র কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ডা: এ কে এম ফজলুল হক, ডা: বেলায়েত হোসেন ঢালি, ডা: ঈসা চৌধুরি, ডা: সারোয়ার আলম।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশিনের সি. সহ-সভাপতি ডাক্তার সাইফুদ্দিন সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মোনাইম ফরহাদ, স্বাগত বক্তব্য দেন ডাক্তার নুরুল ইসলাম, ডা: মাহমুদুল হাসান, ডা: তাশদীদ আনান, ডা: জুয়েল, ডা: রাকেশ, ডা: রাকিব, ডা. শ্রীপূর্ণা, ডা: মিজান, ডা. তারেক সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

ডাক্তার ফজলুল হক বলেন, আমরা এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, যেখানে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের জন্য অধিকারের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য করবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মানেই অসাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা। 

ড্যাবের প্রেসিডেন্ট ডাক্তার মো: জসিমুদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেফতার হত্যা, খুন, গণতন্ত্র ধ্বংস এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসক গোষ্ঠী। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button