চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও হুমকির অভিযোগ: বনানীতে আতঙ্কের নাম ‘চুল্লা শাহীন’

হাবিব সরকার স্বাধীন
গুলশান-বনানী এলাকায় স্পা ও শিশা বারের ব্যবসার আড়ালে মাদক বাণিজ্য, দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি এবং সাংবাদিকদের হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন শাহীন ওরফে ‘চুল্লা শাহীন’ নামে এক কথিত যুবদল নেতা। একসময় ড্রাইভার হিসেবে পরিচিত শাহীন এখন নিজেকে নেতা পরিচয় দিয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘মুসা বাহিনী’ দিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিরও অভিযোগ রয়েছে।
স্পা ব্যবসার আড়ালে মাদক বাণিজ্য
অভিযোগ উঠেছে, বনানীর একাধিক স্পা সেন্টার ও শিশা বার ব্যবহার করে শাহীন একটি মাদকের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। বনানীর স্পা ব্যবসায়ী মিজানের মাধ্যমে শুভ নামের এক সহযোগীকে দিয়ে তিনি মাদক সরবরাহ করান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাবুলের স্পা এবং শহীদের স্পাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শাহীন ও তার সহযোগীদের দখলে রয়েছে। এই অবৈধ ব্যবসায় অল্প বয়সী তরুণীদের ব্যবহার করা হয় বলেও জানা যায়। শহীদ নামে একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, শাহীন তার স্পা সেন্টারেরও অংশীদার।
সাংবাদিকদের হুমকি ও ক্ষমতার দাপট
কথিত এই নেতা শুধু চাঁদাবাজিতেই সীমাবদ্ধ নন, গণমাধ্যম কর্মীদেরও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। হোয়াটসঅ্যাপে একজন সাংবাদিককে “দেখে নেওয়ার” হুমকি দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে। সম্প্রতি একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে, যেখানে শাহীনকে বলতে শোনা যায়, বনানী থানার ওসি রাসেলের নির্দেশে তিনি গুলশান-বনানী রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। চাঁদা না দেওয়ায় তিনি এমনটি করেছেন বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে বনানী থানার ওসির বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে এড়িয়ে যান।
একাধিক দখলদারিত্ব ও নির্যাতনের অভিযোগ
শাহীন ও তার ‘মুসা বাহিনী’র বিরুদ্ধে রয়েছে দখলদারিত্ব ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ। স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, থানা পুলিশের সঙ্গে শাহীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রভাব খাটিয়ে তিনি তার প্রতিপক্ষদের হয়রানি করতে আওয়ামী লীগের তকমা লাগিয়ে দেন। এরপর তার ক্যাশিয়ার মুসার বাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালানো হয় এবং মোটা অঙ্কের টাকার জন্য দর-কষাকষি করা হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
যুবদলের অবস্থান
শাহিনের এসব কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন যুবদল। শাহীনের দলীয় পরিচয় ও তার কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ חדভাবে জানান, “শাহীন দলের কেউ নয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুবদলের নাম ভাঙিয়ে যারাই অপকর্ম করবে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।” এই বিবৃতির মাধ্যমে শাহীনের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।



