
এম এ মান্নান:
জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপিই দেশের সংস্কার করবে
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের জন্য যে ৩১ দফা দিয়েছে, সেগুলোই আসল সংস্কার। যেকোনো সংস্কার একটি রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকার। জাতীয় সংসদে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমেই সংস্কার তথা আইন প্রণয়ন হয়। বিএনপি বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলেই রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচি দিয়েছিল। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপিই দেশের সংস্কার করবে।
তিনি বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পূর্ব ও পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে চাল ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং বিএনপির সদস্য ফরম পূরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি পশ্চিম বাকলিয়ার বড়মিয়া মসজিদ এলাকা, পূর্ব বাকলিয়ার আবদুল লতিফ হাট এলাকা ও বজ্রঘোনার সোনা মিয়া সওদাগরের বাড়ির মাঠে আটশত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করেন।
এর আগে তিনি সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত পূর্ব বাকলিয়া সৈয়দ আব্দুল আজিজ শাহ্ পাড়াস্থ হাজী হামিদুল্লাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান সংস্কারের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এসময় মেয়র বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সবসময় মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন। গত ১৬ বছরে একমাত্র নেত্রী যাঁকে জোরপূর্বক জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
নগরের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “আমি মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার সাত-আট মাসের মধ্যে আল্লাহর রহমতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি, বাকি কাজও দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। চকবাজার এলাকায় ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে, কাউকে উচ্ছেদ না করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং বর্ষায় ভেঙে যাওয়া সড়কগুলোর কাজও চলছে।”
তিনি বলেন, “অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নির্যাতন-নিষ্পেষণ সহ্য করেও দল ও এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন। বিশেষ করে বিএড কলেজ এলাকায় নেতাকর্মীদের অবদান কখনো ভোলার নয়। আমি আজকে মেয়র হয়েছি শুধুমাত্র মহান আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণে।”
আন্দোলন-সংগ্রামের সময় যেসব নেতাকর্মী ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মেয়র বলেন, “আমার দরজা সবসময় আপনাদের জন্য খোলা থাকবে। আমি মেয়র থাকি বা না থাকি, আপনাদের অভিভাবক হিসেবেই পাশে থাকব।”
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগর গড়তে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “পরিচ্ছন্ন নগরী গড়া শুধু সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের দায়িত্ব নয়, নাগরিকদেরও সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলবেন না। এগুলোই জলাবদ্ধতার মূল কারণ। এই শহর আমার, আপনার, সবার। শহর পরিষ্কার রাখতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিচ্ছন্নতার কাজ দ্রুত করতে আরও ডাস্টবিন, ট্রাক ও আধুনিক মেশিনারিজ যুক্ত করা হবে। নগরীকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “আগ্রাবাদ একটি আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যিক এলাকা। প্রতিদিন এখানে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী ও পর্যটক যাতায়াত করেন। অফিস সময়ে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে হকার বসায় নগরীতে যানজট ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। তাই আমি সেখানে হকারদের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অস্থায়ী ভ্যানগাড়ি ও ছাতা ব্যবহার করে হকাররা দোকান বসাতে পারবেন। তবে দিনের বেলা ব্যবসার নামে কোনোভাবেই রাস্তা দখল করা যাবে না। এছাড়া, যেসব হকার ব্যবসা করবেন, তাঁদের ব্যবসা ভ্রাম্যমাণ হতে হবে। স্থায়ীভাবে নালা, সড়ক, ফুটপাত দখল করে ব্যবসার নামে দখলদারি চলবে না।”
এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, সাবেক গণশিক্ষা সম্পাদক ইব্রাহিম বাচ্চু, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিন মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর মো. তৈয়ব, সহ-প্রচার সম্পাদক মো. শাহজাহান, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল বাবুল, পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল ছগির, পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মো. মহিউদ্দিন, সদস্য সচিব আলী আজগর, বাকলিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর, বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম নিরব, হাজী মো. ইউছুপ, ফোরকান হোসেন চৌধুরী, বাকলিয়া থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব হাজী মো. মুছা, বিএনপি নেতা এস এম পারভেজ, খোরশেদ আলম, জাফর ইকবাল, মো. ইখতিয়ার, আবদুল আজিজ, মো. জসিম উদ্দিন, ওমর ফারুক, ছানাউল্লাহ, আবদুল কাদের, রাসেল শিকদার, উসমান গনি, ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দীন কাদের আসাদ, গাজী শওকত প্রমুখ।



