
অর্থ দিয়ে পদ কেনার অভিযোগ অস্বীকার এনসিপি নেতাদের; বলছেন, ষড়যন্ত্রের শিকার সাবেক আ.লীগ নেতা স্বাধীন।
সদর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরে জুলাই গণআন্দোলনের সময় সহিংসতার অভিযোগে দায়ের হওয়া তিনটি মামলার আসামি এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতাকে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টিতে (এনসিপি) গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীন সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান।
তাকে এনসিপি’র সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করিনী ইউনিয়নের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মামলা থেকে বাঁচতে বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তিনি এই পদ পেয়েছেন।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি
কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীন রংপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের জুলাই গণআন্দোলনের সময় তিনি আন্দোলন দমনে অস্ত্র ও অর্থ জোগান দিয়েছিলেন। পট পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এমন একজন ব্যক্তিকে এনসিপি’র মতো একটি নতুন রাজনৈতিক দলে পদায়ন করায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এনসিপি নেতাদের ব্যাখ্যা ও পাল্টা দাবি
এই বিতর্ক নিয়ে এনসিপি নেতারা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এনসিপি’র সদর উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী তওহিদ হোসেন সাদ্দাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীনকে ২০২০ সালেই আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। জুলাই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে তার ভূমিকা ছিল ভিন্ন। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে।”
একই সুরে কথা বলেছেন এনসিপি’র রংপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল্লাহ আল গালিব। তিনি বলেন, “আমরা তার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তিনি ২০২০ সালের পর আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না এবং ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তিনি জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষেই মাঠে ছিলেন।”
গালিব আরও যোগ করেন, “তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-বিরোধিতার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। তবে এরপরও যদি তার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
যোগাযোগ করা যায়নি অভিযুক্তকে
এই ঘটনায় পুরো রংপুর জুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।



