দৈনন্দিন জীবনে বরকত লাভের কয়েকটি আমল

বোনেরা, ফরজ ইবাদতের পর কয়েকটি আমল কখনো ছাড়বেন না। ইনশাআল্লাহ, জীবনে বরকত আসবে।
১. ইস্তেগফার: সবসময় মুখে ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) জারি রাখুন, দিনে এক-দুই হাজার বা যতবার সম্ভব। ইস্তেগফারে রত থাকলে ইনশাআল্লাহ আপনার ওপর আজাব বা মুসিবত আসবে না, রিজিকে বরকত আসবে এবং দোয়া কবুল হবে।
২. দরুদ পাঠ: ইস্তেগফারের পাশাপাশি দরুদ পাঠ করুন। দরুদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত নাজিল হয় এবং ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া যায়।
৩. সালামের প্রসার: ঘরে প্রবেশ করে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হলে প্রতিদিন সালাম দিন। সালামের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে মহব্বত বাড়ে এবং ঘর থেকে শয়তান বিতাড়িত হয়।
৪. ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কাজ শুরু: যেকোনো কাজ, তা যতই ছোট হোক, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করুন। আল্লাহর নামে শুরু করলে কাজে বরকত লাভ হয়।
৫. সূরা বাকারা তিলাওয়াত: প্রতিদিন সূরা বাকারা তিলাওয়াত করার চেষ্টা করুন। সাংসারিক দায়িত্ব সামলে পুরোটা তিলাওয়াত করা কঠিন হতে পারে, তাই যতটুকু সম্ভব তিলাওয়াত করুন। এটি একটি বরকতময় সূরা। হায়েজ (মাসিক) অবস্থায় এর অডিও শুনতে পারেন।
৬. নিয়মিত সদকা: প্রতিদিন এক টাকা হলেও সদকা করুন। তা সম্ভব না হলে কুকুর-বিড়ালের মতো প্রাণীদের খাবার বা পানি দিন। সদকা বিপদ থেকে মুক্তির ওসিলা বা মাধ্যম।
৭. সকাল-সন্ধ্যার যিকির: সকাল-সন্ধ্যার যিকির বা দোয়াগুলো কখনো বাদ দেবেন না। সকাল, সন্ধ্যা এবং ঘুমানোর আগে তিন কুল (সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়ে শরীর বন্ধ করা আবশ্যক। এই আমলের মাধ্যমে আল্লাহ আপনাকে নিজ হেফাজতে রাখবেন।
৮. গণনা থেকে বিরত থাকা: টাকা-পয়সা, সম্পদ, ঘরের আসবাবপত্র বা চাল-ডালের মতো জিনিস বারবার গণনা করবেন না, এতে বরকত কমে যায়। লোভ পরিহার করুন। দুনিয়ার বিষয়কে অন্তরে নয়, বরং স্বাভাবিক প্রয়োজন হিসেবে মাথায় রাখুন। ফলে কোনো কিছু হারিয়ে গেলে যেমন আফসোস হবে না, তেমনি হারানোর ভয়ও থাকবে না।
৯. মাগরিবের আগে দরজা-জানালা বন্ধ: মাগরিবের আজানের আগেই “বিসমিল্লাহ” বলে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিন। মাগরিবের নামাজের পর প্রয়োজনে আবার খুলে দিতে পারেন। হাদিসে এই বিষয়ে সতর্কতা এসেছে।
১০. আল্লাহর কাছে চাওয়া: সব বিষয়ে এবং সবকিছুর জন্য কেবল আল্লাহর কাছেই চাইবেন। যেকোনো প্রয়োজন প্রথমে আল্লাহকে বলুন, তারপর অন্য কাউকে। ঘরের কোনো জিনিস ফুরিয়ে গেলে কর্তাব্যক্তিকে জানানোর আগেও আল্লাহকে বলুন। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আপনার মুখাপেক্ষিতা বাড়বে এবং মানুষের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে।
১১. অকৃতজ্ঞতা ও হিংসা পরিহার: “আমার নেই, আমি পাইনি, তুমি দাওনি, কেউ দেয়নি”—এই ধরনের আফসোস বা হা-হুতাশ করবেন না। হিংসা পরিহার করে অন্যের জন্য দোয়া করুন। নিজের যা আছে, তার জন্য আল্লাহর প্রতি বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। শুকরিয়া আদায় করলে আল্লাহ নেয়ামত বাড়িয়ে দেন।
এই কয়েকটি আমল নিজের জন্য অপরিহার্য করে নেবেন, ইনশাআল্লাহ।



