মাধবপুরে ড্রেজার ব্যবসার নেপথ্যে ঘুষখোর তহশিলদার কান্তি দেবনাথ

জুয়েল খন্দকার
মাধবপুর ইউনিয়নে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের অবৈধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের মূল হোতা হিসেবে ভূমি তহশিলদার কান্তি দেবনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১নং মাধবপুর ইউনিয়নের ড্রেজার ব্যবসায়ীদের সকল অবৈধ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন ভূমি তহশিলদার কান্তি দেবনাথ বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, মাধবপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পাশেই মোট তিনটি ড্রেজার চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ড্রেজার ব্যবসায়ী জানান, “তহশিলদার কান্তি দেবনাথকে টাকা না দিয়ে আমরা কি ড্রেজার চালাতে পারব? তাকে ঘুষ দিয়েই আমরা ড্রেজার চালাই, নয়তো ইউএনও ও এসিল্যান্ড এসে সব ভেঙে দেয়। ইউএনও ও এসিল্যান্ড অভিযানে আসার আগেই কান্তি দেবনাথ বাবু আমাদেরকে ফোন করে জানিয়ে দেন, তখন আমরা সবকিছু সরিয়ে ফেলি।”
মাধবপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পাশের রাস্তায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কয়েকটি স্থাপনা ভরাটের কাজ চলছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য ভূমি অফিসে গেলে তহশিলদার কান্তি দেবনাথকে একজন বৃদ্ধার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে পকেটে ঢোকাতে দেখা যায়। পরে সাংবাদিকরা ভিজিটিং কার্ড দিলে তিনি অফিসের বাইরে ডেকে এনে আলোচনার চেষ্টা করেন। ভূমি অফিসের পাশে ড্রেজার চলার বিষয়ে তিনি অবগত আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “জানি তো, আপনারা আমাকে কী করতে বলেন? আপনাদেরকে এখনই এসিল্যান্ড স্যারকে কল দিয়ে হাজতে পাঠিয়ে ছাড়ব।” এই হুমকি দিয়ে তিনি এসিল্যান্ডকে ফোন দেন। তখন সাংবাদিকরা দেখান যে, এ বিষয়ে ইউএনও’র সাথে তাদের কথা হয়েছে। এরপর তহশিলদার কান্তি দেবনাথ বলেন, “আপনারা বলেছেন, ব্যবস্থা নেব।” ভাবা যায়, কান্তি দেবনাথের নাকের ডগাতেই ড্রেজার চলে, কিন্তু কেউ অভিযোগ না দিলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন না? তার মানে, অপরাধের অভিযোগ না পেলে তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। আর করবেনই বা কীভাবে, কারণ অবৈধ ড্রেজার তো তার নেতৃত্বেই চলে!
এ বিষয়ে জানার জন্য ব্রাহ্মণপাড়া ইউএনওকে ফোন করলে তিনি এসিল্যান্ডকে জানাতে বলেন। তবে এসিল্যান্ডকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ঘুষখোর কান্তি দেবনাথ জমি খারিজ করতেও ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না। কুমিল্লা শহরেও তিনি বিভিন্ন স্থানে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধান চলমান।



