অপরাধএক্সক্লুসিভবাংলাদেশ

চাকরির ইন্টারভিউয়ের নামে তরুণীকে যৌন হয়রানি, খিলগাঁওয়ে প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে চাকরির সাক্ষাৎকারের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে অফিসে আটকে রেখে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ। ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

বিশেষ প্রতিবেদন

চাকরির ইন্টারভিউয়ের আড়ালে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত রিয়াজ ওরফে সাইফ সুজা ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী তরুণী।

ঘটনার বিবরণ: ইন্টারভিউয়ের নামে ফাঁদ

ভুক্তভোগী স্বপ্না আক্তার (ছদ্মনাম), যিনি ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, তার অভিযোগ অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটে গত ২৫ আগস্ট। চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য তাকে খিলগাঁও রেলগেট এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলায় রিয়াজের অফিসে ডাকা হয়।

তিনি জানান, অফিসে পৌঁছানোর পর তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এরপর রিয়াজ জানায়, কোম্পানির মালিক না আসা পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে। এই সুযোগে রিয়াজ তার সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ জমানোর চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়।

জোরপূর্বক শ্লীলতাহানির চেষ্টা

থানায় দায়ের করা অভিযোগে স্বপ্না উল্লেখ করেন, রিয়াজ বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। একপর্যায়ে মাদকাসক্ত অবস্থায় সে তরুণীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ভুক্তভোগীর কথায়, “আমি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সে আমাকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। আমি কোনোভাবে নিজেকে রক্ষা করে সেখান থেকে পালিয়ে আসি।”

এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই তরুণী। পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং খিলগাঁও থানায় অভিযুক্ত রিয়াজের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

কে এই অভিযুক্ত রিয়াজ?

অভিযুক্ত রিয়াজ ওরফে সাইফ সুজা ইসলামের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানায় বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, রিয়াজ একজন অভ্যাসগত প্রতারক এবং এর আগেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছে বলে তার সন্দেহ।

সমাজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

রাজধানীর বুকে এমন ঘটনায় নারী নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। একজন সমাজকর্মী বলেন, “চাকরির মতো একটি জরুরি প্রয়োজনকে পুঁজি করে যারা এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালায়, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন। এটি শুধু একজন নারীর ওপর আক্রমণ নয়, বরং পুরো সমাজ ব্যবস্থার প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ।”

ভুক্তভোগী তরুণী আশা করছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করবে এবং অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কোনো নারীকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে না হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button