
ডেস্ক রিপোর্ট
রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা নিকুঞ্জ এখন অটোরিকশামুক্ত এক নতুন দিগন্তে। গত ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে এই এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়। এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। চার মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের সেই অর্জন অটুট রয়েছে এবং এলাকায় ফিরে এসেছে এক ভিন্ন ধরনের শান্তি ও শৃঙ্খলা।
নিকুঞ্জে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের এই সিদ্ধান্তে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। স্থানীয়দের মতে, এর ফলে যানজট, শব্দদূষণ এবং অনিরাপদ চলাচলের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এখন পথচারীরা, বিশেষ করে শিশু ও প্রবীণরা, নির্বিঘ্নে রাস্তায় চলাচল করতে পারছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “এখন নিকুঞ্জে হাঁটার মতো প্রশান্তি আর কোথাও নেই।” এই পদক্ষেপকে সারাদেশের জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
সম্প্রতি একটি নতুন আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল, বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে আর্থিক লাভের আশায় পুনরায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালুর ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর এই অভিযোগের ভিত্তিতে, নিকুঞ্জ ১ ও ২ কল্যাণ সমিতি, খিলক্ষেত টানপাড়া কল্যাণ সোসাইটি এবং স্থানীয় স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার প্রতিনিধিরা খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আলাদা আলাদাভাবে অবহিতকরণ দরখাস্ত দাখিল করেছেন।
এই পত্রে তারা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। তারা দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন যে, “নিকুঞ্জের শান্তি জনগণের ঐক্য আর সাহসে ফিরে এসেছে। কোনো রাজনৈতিক ছত্রছায়া বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই অর্জন নষ্ট হতে দেওয়া হবে না।”
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, যদি কোনো মহল পুনরায় অটোরিকশা চালুর চেষ্টা করে, তবে তা গণপ্রতিরোধের মুখে পড়বে। একজন বাসিন্দা ইমরান রাজা বলেন, “আমরা রাস্তায় নেমে এসেছিলাম জনস্বার্থে, প্রয়োজন হলে আবারও নামব।”
খিলক্ষেত টানপাড়া কল্যাণ সোসাইটির আহ্বায়ক জাহিদ ইকবাল বলেন, “সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়, নিকুঞ্জের জনগণ তা প্রমাণ করেছে।” তিনি আরও বলেন, “কোনো রাজনৈতিক অপশক্তিই আর নিকুঞ্জে অটোরিকশা চালু করতে পারবে না। ঐক্যবদ্ধ এলাকাবাসীর কাছে সকল ষড়যন্ত্র পরাভূত হবে।”
খিলক্ষেত থানা সূত্রে জানা গেছে, তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সদা প্রস্তুত আছে। চার মাস আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া অবৈধ যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নিকুঞ্জ এলাকায় পুনরায় চলতে দেওয়া হবে না। জনগণের জানমাল ও প্রত্যাশা রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।



