নতুন বাজেটে উৎসে আয়কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারাদেশের সব জেলা, উপজেলা ও পৌরসভায় জমির শ্রেণি অনুযায়ী নতুন করহার নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট:
দীর্ঘদিন ধরে যারা বেশি খরচের কারণে কেনা জমি রেজিস্ট্রেশন করতে পারছিলেন না, তাদের জন্য অবশেষে এলো স্বস্তির খবর। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন বাজেটে সরকার জমির রেজিস্ট্রেশনের উপর উৎসে আয়করের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। ২৬ মে ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটে এলাকা ও জমির শ্রেণি অনুযায়ী নতুন এই করহার নির্ধারণ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত দেশের আবাসন খাতে গতি আনবে এবং সাধারণ মানুষের হয়রানি কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কবে থেকে কার্যকর হবে নতুন নিয়ম?
সরকারি গেজেট অনুযায়ী, জমি নিবন্ধনের এই নতুন করহার আগামী ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে একযোগে কার্যকর হবে। এর ফলে দেশের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং পৌরসভা এলাকার জমির মালিকরা কম খরচে তাদের সম্পত্তি নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে খরচ কমলো কত?
দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামে জমির রেজিস্ট্রেশন খরচ কমানো হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার জন্য নতুন করহার নিচে তুলে ধরা হলো:
ঢাকা জেলা:
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানা এলাকায় রেজিস্ট্রেশন করহার ৬% নির্ধারণ করা হয়েছে। একই হার প্রযোজ্য হবে ধানমন্ডি, ওয়ারী, কাফরুল, মোহাম্মদপুর এবং সূত্রাপুর থানার জন্যও। এছাড়া খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, উত্তরা ও পশ্চিম মুগদা এলাকার জমিও ৬% করহারে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
চট্টগ্রাম জেলা:
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের খুলশি, পাঁচলাইশ এবং পাহাড়তলী এলাকার জন্য নতুন করহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪%। পাশাপাশি আকবর শাহ, ইপিজেড এবং কর্ণফুলী থানা এলাকাতেও একই হারে কর প্রযোজ্য হবে।
ঢাকার বাইরে এবং অন্যান্য এলাকার জন্য নতুন করহার
শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রামেই নয়, সারা দেশেই কমানো হয়েছে রেজিস্ট্রেশন খরচ।
- ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলা: দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার এবং ধামরাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপজেলাগুলোর জন্য করহার ৪% নির্ধারণ করা হয়েছে।
- অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকা: দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকার (যেখানে নির্দিষ্ট শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ নেই) জন্য করহার হবে ৪%।
- পৌরসভা এলাকা: পৌরসভা এলাকাগুলোকে দুটি সারণিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম সারণিভুক্ত এলাকায় দলিলে উল্লিখিত মূল্যের উপর ৩% কর দিতে হবে। দ্বিতীয় সারণিভুক্ত এলাকায় ২% কর অথবা শতাংশপ্রতি ৫০০ টাকা (যেটি বেশি) প্রদান করতে হবে।
এই পদক্ষেপের ফলে এখন থেকে জমির প্রকৃত বিক্রয়মূল্যে দলিল নিবন্ধন করতে মানুষ উৎসাহিত হবে এবং আবাসন খাতে স্বচ্ছতা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।



