Uncategorizedইসলাম ধর্ম

বিতর নামাজে কোন রাকাতে কোন সুরা পড়তেন  রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ? জেনে নিন সুন্নত পদ্ধতি

তিন রাকাত বিতর নামাজের প্রতিটি রাকাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নির্দিষ্ট কিছু সুরা পাঠ করতেন। হাদিসের আলোকে জেনে নিন বিতর নামাজ আদায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতটি।

ইসলামিক ডেস্ক: নামাজের পর বিতর নামাজ আদায় করা ওয়াজিব এবং এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিয়মিত এই নামাজ আদায় করতেন। তিনি সাধারণত তিন রাকাত বিতর পড়তেন এবং প্রতিটি রাকাতে নির্দিষ্ট সুরা তিলাওয়াত করতেন, যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

বিতর নামাজে সুরা পাঠের নববী পদ্ধতি

হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর তিন রাকাত বিতর নামাজের পঠিত সুরাগুলোকে একটি বিশেষ নিয়মে সাজাতেন। এই সুন্নত পদ্ধতিটি নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

প্রথম রাকাত:
নামাজের শুরুতে সানা, সুরা ফাতিহা পাঠের পর নবীজি ﷺ সুরা আল-আ’লা (৮৭ নম্বর সুরা) তিলাওয়াত করতেন। এই সুরায় মহান আল্লাহর প্রশংসা, সৃষ্টিজগতের নিপুণতা এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় রাকাত:
দ্বিতীয় রাকাতে তিনি সুরা ফাতিহার পর সুরা আল-কাফিরুন (১০৯ নম্বর সুরা) পাঠ করতেন। এই সুরায় শিরক ও কুফরের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের বলিষ্ঠ ঘোষণা রয়েছে।

তৃতীয় রাকাত:
বিতরের শেষ বা তৃতীয় রাকাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সুরা ফাতিহার পর সুরা আল-ইখলাস (১১২ নম্বর সুরা) পাঠ করতেন। এই সুরায় আল্লাহ তাআ’লার একত্ববাদের নিখুঁত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামের মৌলিক আকিদার ভিত্তি।

তৃতীয় রাকাতের জন্য বিশেষ আমল

বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, নবীজি ﷺ মাঝে মাঝে তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাসের সাথে আরও দুটি সুরা যোগ করতেন। তিনি সুরা আল-ফালাক (১১৩ নম্বর সুরা) এবং সুরা আন-নাস (১১৪ নম্বর সুরা) পাঠ করতেন। এই সুরা দুটি ‘মু’আউওয়াযাতাইন’ নামে পরিচিত, যা সকল প্রকার অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার জন্য নির্দিষ্ট।

হাদিসের দলিল

এই আমলটির সপক্ষে একাধিক নির্ভরযোগ্য হাদিস রয়েছে। একটি প্রসিদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
“রাসূলুল্লাহ ﷺ বিতর নামাজে পাঠ করতেন: ‘সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আ’লা’ (সুরা আ’লা), ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ (সুরা কাফিরুন), এবং ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ (সুরা ইখলাস)।” — (সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিযী, সুনানে নাসায়ী)

এই সুন্নত অনুসরণ করে বিতর নামাজ আদায় করা নিঃসন্দেহে উত্তম এবং অধিক সওয়াবের কারণ। এটি নামাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button