ইসলাম ধর্ম

আসমানের বিশেষ দরজা খুলে যে সুসংবাদ এলো: দোয়া কবুলের দুই ‘নূর’

সূরা ফাতিহা ও বাকারার শেষ দুই আয়াত প্রসঙ্গে বিশেষ ফেরেশতার মাধ্যমে নবীজি (সা.)-কে দেওয়া হয়েছিল অনন্য এক সুসংবাদ।

ইসলামিক ডেস্ক: মহান আল্লাহর কাছে নিজের চাওয়া-পাওয়া তুলে ধরার অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো দোয়া। প্রত্যেক মুমিনই চান তার দোয়া যেন আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। দোয়া কবুলের জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু সময়, স্থান এবং নিয়ম। হাদিস শরিফে এমন একটি ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে আসমানের একটি বিশেষ দরজা খুলে পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো আগমনকারী এক ফেরেশতার মাধ্যমে দোয়া কবুলের দুটি বিশেষ ‘নূর’ বা আলোর সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।

এক অভূতপূর্ব আসমানি ঘটনা

বিখ্যাত সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর কাছে ফেরেশতাদের সর্দার হযরত জিবরাইল (আ.) বসে ছিলেন। এমন সময় ওপর থেকে একটি তীব্র আওয়াজ এলো।

জিবরাইল (আ.) আসমানের দিকে তাকিয়ে বললেন, “এটি আসমানের এমন একটি দরজা যা আজই খোলা হলো, এর আগে আর কখনো খোলা হয়নি।”

বর্ণনাকারী বলেন, সেই দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করলেন। জিবরাইল (আ.) তখন বলেন, “এই ফেরেশতা আজই প্রথম পৃথিবীতে এলেন, এর আগে তিনি আর কখনো আসেননি।”

দুই নূরের অনন্য সুসংবাদ

পৃথিবীতে প্রথমবার আগমনকারী সেই ফেরেশতা রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে সালাম দিয়ে বললেন:

“আপনি দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনার পূর্বে আর কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। সেই দুটি নূর হলো— সূরা আল-ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত (আমানার রাসূলু… থেকে শেষ পর্যন্ত)।”

দোয়া কবুলের নিশ্চয়তা

এরপর সেই ফেরেশতা এই দুটি নূরের ফজিলত বর্ণনা করে বলেন:

“আপনি এ দুটো থেকে কোনো হরফ পাঠ করে কোনো কিছু চাইলেই আপনাকে তা দেওয়া হবে।”(সূত্র: সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮০৬)

উপসংহার
এই হাদিসটি মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশাল সুসংবাদ বহন করে। এটি প্রমাণ করে যে, সূরা আল-ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত কেবল কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ অংশই নয়, বরং এগুলো দোয়া কবুলের এক পরীক্ষিত ও নিশ্চিত মাধ্যম। কোনো বান্দা যখন পূর্ণ একিন ও বিশ্বাসের সঙ্গে এই আয়াতগুলো পাঠ করে আল্লাহর কাছে হাত তুলবে, তখন আল্লাহ তার দোয়া ফিরিয়ে দেবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত এই দুটি বিশেষ নূরের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া এবং দোয়ার সময় এগুলো পাঠ করে আল্লাহর অশেষ রহমত ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button