অপরাধজাতীয়প্রশাসনবাংলাদেশ

কমলনগরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা: প্রধান দুই আসামি র‍্যাবের জালে

পূর্বশত্রুতার জেরে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন নুরুল আমিন সর্দার। ঘটনার দুই মাস পর নোয়াখালীর কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিশেষ প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধ নুরুল আমিন সর্দারকে (৭০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১। শনিবার (১৪ জুন) রাতে নোয়াখালী জেলার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে মাকছুদ (২৪) এবং একই এলাকার মনিরের ছেলে আলমগীর (২৩)।

ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

র‍্যাব জানায়, গত ৭ এপ্রিল রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে অভিযুক্ত মাকছুদ, আলমগীরসহ তাদের সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিহতের ছেলে বজলুর রহমান ভুলুর (৩০) ওপর হামলা চালায়। ছেলের চিৎকার শুনে তার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বাবা নুরুল আমিন সর্দার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তাকেও বেধড়ক মারধর করে।

গুরুতর আহত অবস্থায় বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুরুল আমিন সর্দারকে মৃত ঘোষণা করেন।

মামলা ও র‍্যাবের অভিযান

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছেলে বজলুর রহমান বাদী হয়ে গত ১০ এপ্রিল কমলনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা পলাতক ছিল। র‍্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।

যেভাবে গ্রেপ্তার হলো আসামিরা

ঘটনার প্রায় দুই মাস পর, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের একটি দল শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে। নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার রামবল্লভপুর গ্রাম থেকে মামলার ৪ নম্বর আসামি মাকছুদকে এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার সামনে থেকে ৬ নম্বর আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

র‍্যাব-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের কমলনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button