রংপুরে শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যা, মানসিক ভারসাম্যহীন মা গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট: রংপুরের তারাগঞ্জে ছয় মাস বয়সী শিশুকন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যার এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এই অভিযোগে শিশুটির মা তুলসী রানীকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম পলাশবাড়ী গ্রামে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে বাবু লাল রায়ের স্ত্রী তুলসী রানী তাঁর নিজ বাড়িতে ছয় মাস বয়সী শিশুকন্যা জুহি রানীকে রান্নার কাজে ব্যবহৃত ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেই পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে ৯৯৯ থেকে একটি দল এবং তারাগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে এবং মা তুলসী রানীকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাবু লাল রায় বাদী হয়ে স্ত্রী তুলসী রানীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
শিশুটির দাদি পাতানী বালা গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁর পুত্রবধূ তুলসী রানী বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। কারও সাথে ঠিকমতো কথা বলতেন না এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতেন।
অন্যদিকে, শিশুটির বাবা বাবু লাল রায় বলেন, “আমার স্ত্রী মানসিক রোগী। মেয়েকে হত্যার পর সে আমাকে বলে, ‘তোর বাচ্চাকে আমি মানুষ করতে পারব না, তোর বাচ্চা তুই নে। বাচ্চাটা হওয়ার পর থেকে আমি ভালো করে রান্না করে খেতে পারি না। আমাদের আরও একটা মেয়ে আছে, তারও সেবা-যত্ন করতে পারি না।’”
তারাগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) এম এ ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তুলসী রানী নিজেই শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, মা-ই শিশুটিকে হত্যা করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিনি একজন মানসিক রোগী। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গ্রেপ্তার তুলসী রানীকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন ওসি।



