তেঁতুলিয়ায় মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণ: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার ঘটনা ধামাচাপা ও অপহরণের অভিযোগও রয়েছে
মোঃএনামুল হক: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর নানী বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামাল উদ্দিন (৪৫) নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত জামাল উদ্দিন উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ঠুনঠুনিয়া এলাকার আলী হোসেনের ছেলে। রবিবার বিকেলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী ছোটবেলা থেকেই তার নানীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। গত ১৭ জানুয়ারি সকালে সে পাশের বাড়িতে থাকা অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনের ফ্রিজ থেকে মাংস আনতে যায়। এসময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জামাল তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। ছাত্রীটি এতে অস্বীকৃতি জানালে জামাল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করে। ধারাবাহিক ধর্ষণের ফলে একপর্যায়ে ছাত্রীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর জামাল উদ্দিন প্রথমে দায় স্বীকার করলেও পরে তার স্ত্রী ও ভাইয়ের সহযোগিতায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এমনকি, গত ১৪ জুন সকালে ভুক্তভোগীকে একটি মাইক্রোবাসে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যদিও পরে তার পরিবার তাকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীর নানী জানান, স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে এবং অভিযুক্তরা তালবাহানা শুরু করায় তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রথমে জামাল দোষ স্বীকার করেছিল, কিন্তু পরে অস্বীকার করে। তাই আমরা থানায় মামলা করেছি।”
মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতেই পুলিশ জামাল উদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। মামলায় জামাল উদ্দিন ছাড়াও তার স্ত্রী ও ভাইসহ মোট তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রধান আসামি জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”



