ভালুকায় নজিরবিহীন নৃশংসতা: মা ও স্ত্রীর কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি, শোকে স্তব্ধ গ্রামবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহের ভালুকার ভরাডোবা গ্রামে এক অকল্পনীয় ও বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছে। কবরের নিস্তব্ধতা ভেঙে একদল দুর্বৃত্ত শিক্ষকের মা ও স্ত্রীর কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ঘটা এই পাশবিক ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া, জনমনে তৈরি হয়েছে তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভ।
ভুক্তভোগী ব্যক্তি উপজেলার মেদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোস্তাকুল আলম খান। এই মর্মান্তিক ঘটনায় তিনি প্রায় বাকরুদ্ধ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের যন্ত্রণা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মানুষ কতটা অমানবিক হলে এমন কাজ করতে পারে, তা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। আমার মা ও স্ত্রীর কবরের এমন পরিণতি দেখতে হবে, এটা ভেবেই আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।” তাঁর এই আর্তনাদ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গ্রামজুড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোস্তাকুল আলম খানের মা রহিমা খাতুন প্রায় ছয় মাস পূর্বে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রী রিনা আক্তার প্রায় দুই বছর আগে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের দুজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছিল। দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে সেই দুটি কবর খুঁড়ে কঙ্কালগুলো নিয়ে যায়।

এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় শুধু পরিবারটিই নয়, পুরো ভরাডোবা গ্রামেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী এটিকে মানবতার ওপর এক চরম আঘাত হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত উদাহরণ। গ্রামের সাধারণ মানুষ এখন তাদের প্রিয়জনদের কবর নিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সচেতন নাগরিক সমাজ এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কবরস্থানগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা না গেলে সমাজে এ ধরনের নৃশংসতা আরও বাড়বে।
এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে এই জঘন্য কাজের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন।



