
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও আনন্দময় করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি বিস্তারিত পরামর্শ তালিকা জারি করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের হয়রানি এড়ানো এবং পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য।
পরিবহন ও হোটেল সংক্রান্ত সতর্কতা
পর্যটকদের বাস থেকে নামার পর দালালদের এড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো অটোরিকশা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রার আগে অবশ্যই গন্তব্য উল্লেখ করে ভাড়া চূড়ান্ত করে নিতে হবে। এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ একটি সুনির্দিষ্ট ভাড়া তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
যারা আগে থেকে হোটেল বুকিং করেননি, তাদের প্রতি অটোরিকশা চালকদের কথায় প্ররোচিত না হয়ে, নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী হোটেল ও কক্ষ যাচাই করে ভাড়া চূড়ান্ত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হোটেলে ওঠার সময় প্রত্যেক পর্যটককে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন সনদের একটি অনুলিপি জমা দিতে হবে।
সৈকতে থাকাকালীন করণীয় ও বর্জনীয়
- নিরাপত্তা: সৈকতে নামার সময় মোবাইল ফোন, মানিব্যাগসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী হোটেলে রেখে যাওয়া উত্তম।
- প্রতারণা থেকে সতর্কতা: কিটকটে ‘ম্যাসেজ বয়দের’ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে, কারণ ম্যাসেজের আড়ালে পর্যটকদের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির আশঙ্কা থাকে। এ ধরনের কাউকে দেখলে কিটকট কর্মী বা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
- কেনাকাটা ও বিনোদন: সৈকতে ভ্রাম্যমাণ হকারদের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার জন্য পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে ছবি তোলার আগে দরদাম ঠিক করে নিতে হবে এবং সম্ভব হলে তার লাইসেন্স ও মোবাইল নম্বর যাচাই করে নেওয়া উচিত। বিচ-বাইক ও ওয়াটার বাইকে চড়ার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মূল্য তালিকা যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- সৈকতের পরিবেশ: সৈকতকে পরিচ্ছন্ন ও হয়রানিমুক্ত রাখতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ভ্রাম্যমাণ হকার, ভিক্ষুক ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের দ্বারা সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে ট্যুরিস্ট পুলিশকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও সার্বিক নিরাপত্তা
খাবারের ক্ষেত্রে প্রতারণা এড়াতে হোটেলের মূল্য তালিকা দেখে নেওয়ার এবং অস্বাস্থ্যকর ও খোলা পরিবেশে তৈরি স্ট্রিট ফুড এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পানিতে নামার সময় লাইফগার্ডের কাছাকাছি নির্ধারিত স্থানে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। কক্সবাজার পর্যটন এলাকা সার্বিকভাবে নিরাপদ হলেও, সন্ধ্যার পর ঝাউবন বা অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা এড়িয়ে চলাই বিচক্ষণতার পরিচায়ক।
জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ
যেকোনো ধরনের হয়রানি প্রতিরোধ বা আইনি সহায়তার জন্য পর্যটকদের তাৎক্ষণিকভাবে ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।
- ডিউটি অফিসার: ০১৩২০১৫৯০৮৭
- এএসপি: ০১৩২০১৫৯২০৯
- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার: ০১৩২০১৫৯০৩৫
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি, জনাব আপেল মাহমুদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ২৪/৭ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং একটি নিরাপদ পর্যটন পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছে।



