বিশ্লেষণসংগৃহীত সংবাদস্বাস্থ্য

খেজুরের বিচি ফেলনা নয়, স্বাস্থ্যের জন্য মহৌষধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণত খেজুর খাওয়ার পর এর বিচি আমরা ফেলে দিই। কিন্তু পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, ফেলনা এই বিচিতেই লুকিয়ে আছে অসাধারণ সব স্বাস্থ্যকর উপাদান, যা বহু রোগের ঝুঁকি কমাতে এবং শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

খেজুর বিচির বহুমুখী উপকারিতা

খেজুরের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান, যা শারীরিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি: এতে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। এটি অন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: গবেষণায় দেখা গেছে, এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ করা উচিত নয়।
  • কিডনির সুরক্ষা: খেজুরের বিচি কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করতে পারে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং মৌসুমি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
  • চুল ও ত্বকের যত্ন: স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি চুল ও ত্বকের যত্নেও খেজুরের বিচির ব্যবহার সুপরিচিত। খেজুর বিচি থেকে নিষ্কাশিত তেল চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে এর গুঁড়ো মধু বা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে তা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে।

কীভাবে ব্যবহার করবেন খেজুরের বিচি?

খেজুরের বিচি ফেলে না দিয়ে খুব সহজেই দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগানো যায়।

  • ক্যাফেইনমুক্ত কফি: বিচিগুলো ভালোভাবে ধুয়ে, রোদে শুকিয়ে এবং এরপর হালকা আঁচে ভেজে গুঁড়ো করে নিলেই তৈরি হয়ে যায় স্বাস্থ্যকর ‘ডেট সিড কফি’। ক্যাফেইনমুক্ত হওয়ায় এই পানীয়টি প্রচলিত কফির একটি চমৎকার বিকল্প, যা শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
  • খাদ্যের সঙ্গে মিশ্রণ: এই গুঁড়ো বিভিন্ন ধরনের পানীয়, স্মুদি, স্যুপ বা বেকারি পণ্যের সঙ্গে মিশিয়েও গ্রহণ করা যায়, যা খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে তোলে।
  • পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার: বিশ্বের অনেক দেশে পশুখাদ্যের পুষ্টিগুণ বাড়াতেও খেজুর বিচির গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়।

সুতরাং, পরেরবার খেজুর খাওয়ার পর বিচিগুলো ফেলে না দিয়ে, শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন এবং এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা গ্রহণ করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button