অপরাধএক্সক্লুসিভগাজীপুরদেশবাংলাদেশ

গাজীপুরে হানিমুন বার: লাইসেন্সের শর্ত ভেঙ্গে চলছে রমরমা মদের ব্যবসা

ছাত্র ও লাইসেন্সবিহীনদের কাছেও অবাধ বিক্রি, প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় অবস্থিত ‘হানিমুন বার অ্যান্ড রেস্তোরাঁ’-এর বিরুদ্ধে লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে অবৈধভাবে মদ বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বারটি আইনকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মদের জমজমাট আসর বসাচ্ছে, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী শুক্রবার অ্যালকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও হানিমুন বারে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর মতোই শুক্রবারও এখানে মদের বেচাকেনা চলে পুরোদমে। আরও আশঙ্কার বিষয় হলো, স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরিহিত শিক্ষার্থীদের কাছেও মদ বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া, যাদের মদ কেনার বা পান করার জন্য ব্যক্তিগত লাইসেন্স নেই, তাদের কাছেও অবাধে মদ সরবরাহ করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত।

বারটির ভেতরে গ্রাহকদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে বিশেষ আয়োজন। প্রায় ৮০টি আসনে গ্রাহকদের মদ পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে সাইড ডিশ হিসেবে বরফ কুচি, সিগারেট, কাঁচা ছোলা, বিভিন্ন প্রকার সালাদ, মাংস এবং ঘি-এ ভাজা রুটির মতো নানা ধরনের খাবার সরবরাহ করা হয়। গ্রাহকদের বিনোদনের জন্য বিশাল পর্দার এলইডি টিভিতে অশালীন নাচ-গান প্রদর্শনেরও অভিযোগ রয়েছে।

বারটির কাউন্টারে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির তৈরি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি মদ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—ইয়েলো লেভেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইভ স্টার ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, জারিনা ভদকা, রোজা রাম এবং ওল্ড রাম। এর পাশাপাশি যমুনা গ্রুপের তৈরি হান্টার বিয়ারও বিক্রি করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু বারের ভেতরেই নয়, হানিমুন বার কর্তৃপক্ষ বাইরের ও ভেতরের কিছু দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে মদ হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এতে তরুণ ও যুব সমাজের মধ্যে মাদকের সহজলভ্যতা বাড়ছে এবং তারা বিপথগামী হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন গাজীপুর জেলার সভাপতি আতিকুর রহমান সরদার বলেন, “হানিমুন বার লাইসেন্সের একাধিক শর্ত ও নিয়ম ভঙ্গ করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগেই বারটি তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা তরুণ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button