অপরাধএক্সক্লুসিভচট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগবাংলাদেশবিভাগরাজনীতি

ফজলে করিমের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কাওছারের যত অপকর্ম

মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রামের রাউজানের প্রতাপশালী এমপি ছিলেন ফজলে করিম। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা সংসদ সদস্য তিনি। তার ক্ষমতার অপব্যবহারে রাউজানে গড়ে উঠেছিল সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে। সেই সুযোগে ফজলে করিম জুনুর অন্যতম সহযোগী তথা ক্যাশিয়ার নামে খ্যাত উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা ইউসুফ শেঠের ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাওছার গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। রাউজানের স্বৈরাচার ফজলে করিম বাহিনীকে ব্যবহার করে এলাকার জমি দখল ও বেচা-বিক্রি সবই ছিল কাওছারের নিয়ন্ত্রণে। বিশেষ করে অন্যান্য ইউনিয়নের মতো উরকিরচর ইউনিয়নেও ফজলে করিমের হয়ে প্রবাসীদের হতে নিয়মিত চাঁদা আদায় করত কাউছার। নিরীহ প্রবাসী পরিবার হতে ফজলে করিমের নামে চাঁদাবাজি ছিল তার প্রধান আয়ের উৎস। চাঁদা আদায়ে অস্বীকৃতি জানালে সেসব প্রবাসীদের পরিবারের উপর নেমে আসত অত্যাচার, নির্যাতন আর তৎকালীন আজ্ঞাবহ ফজলে করিম প্রশাসন তথা রাউজান থানা প্রশাসনের চতুর্মুখী হয়রানি।বিগত আওয়ামী লীগ আমলে কামিয়েছে কোটি কোটি টাকা।চকবাজার জয়নগর ১ নং গণিতে একাধিক বহুতল ভবন ও ৩টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক কাউছার। আছে শাহীন হোস্টেল নামে জবরদখল করা ছাত্রী হোস্টেলসহ একাধিক হোস্টেল কাউছারের নামে।কথিত আছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হোস্টেলে চলত নানান অসামাজিক কর্মকাণ্ড।পাঁচলাইশ এএনজেড নামীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মিত এপার্টমেন্টে ৩টি কাওছারের হাত থেকে রেহাই পায়নি তার দুর্ঘটনায় নিহত ভাইয়ের পরিবার।অভিযোগ আছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বড়ভাইয়ের সম্পত্তি আত্মসাত করতে পরিবারেও বিভিন্ন সময় প্রভাব বিস্তার করত এই কাউছার।বড় ভাইয়ের বাড়ি দখল করতে মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠার আগেই তাঁর স্ত্রী সন্তানদের এক কাপড়েই পারিবারিক বিল্ডিং থেকে বিতাড়িত করে এই দস্যু কাওছার।বড় ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানেরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করলেও টাকার জোরে প্রশাসন,পরিবার,স্বজনেরা কেউ মুখ খুলছেনা। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতনের পর রাউজানের স্বৈরাচার ফজলে করিম জুনু গ্রেফতার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ধ্বংস হলেও আজও মহাপ্রতাপে টিকে আছে জুনুর ক্যাশিয়ার নামে খ্যাত কাওছার।অভিযোগ আছে জুলাই আন্দোলনের ছাত্র জনতা হত্যাকান্ড মামলায় জেলে থাকা ফজলে করিম সহ রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ছাড়িয়ে আনতে অর্থের জোগান দিচ্ছে সাবেক এই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী। জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলাকারী ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের অনুসারী পলাতক আওয়ামী লীগের কর্মীবাহিনীদের নিয়মিত অর্থ সরবরাহ করে গুপ্ত হামলা আর ঝটিকা মিছিল করতে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে কাউসারের।পটপরিবর্তনের পরে বিদেশ পলাতক সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের ক্যাশিয়ার কাউসারের বোনের জামাই মোরশেদকে সাথে নিয়ে কাউসার আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের মিশনে নেমেছে ফজলে করিমের নির্দেশে।এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্র জনতা লেখালেখি করলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের নাম ব্যবহার করে নানারকম হুমকি দিতে থাকে।এব্যাপারে চট্টগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া জুলাই আগস্টে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন।স্বৈরাচার পতন হলেও তাদের দোসর কাউসারেরা এখনও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরদের নাম ব্যবহার করে রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ড চালাচ্ছে যা খুবই উদ্বেগজনক।তারা আশা করছেন কুখ্যাত ফজলে করিমের ক্যাশিয়ার কাউসারকে অতিশীঘ্রই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button