
মিটার না দেখেই বিল তৈরির অভিযোগ, ঘাটতি পূরণে বাড়তি বিল আদায়ের নির্দেশনা!
ডেস্ক রিপোর্ট: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল এবং লাগামহীন অব্যবস্থাপনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন হাজার হাজার গ্রাহক। বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনস্থ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে জুলাই মাসের বিলে ব্যাপক গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের দাবি, মিটার রিডিং না দেখেই মনগড়া বিল তৈরি করা হচ্ছে, যার ফলে তাদের ঘাড়ে চেপেছে অতিরিক্ত বিলের বোঝা।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার রিডাররা নিয়মিত গ্রাহকের বাড়িতে না গিয়ে অফিসে বসেই বিল তৈরি করছেন। বিশেষ করে উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের গ্রাহকদের বিলে এই অসঙ্গতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৪২৭, ২২৪, ২০২, ২২৩ এবং ৪০৬ নম্বর বিলিং বইয়ের গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সেবার মান নিয়েও গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। কলসকাঠি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অভিযোগ নম্বরে gelen ফোন ধরেন না এবং কোনো সমস্যার সমাধানও করেন না। উপরন্তু, গত বছরের ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে হেলে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি, ভেঙে ঝুলে থাকা মিটার এবং кое-রকম জোড়াতালি দেওয়া ছেঁড়া তার এখনো মেরামত করা হয়নি। এসব ঝুঁকিপূর্ণ লাইন যেকোনো মুহূর্তে ছিঁড়ে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
অব্যবস্থাপনা এখানেই শেষ নয়। অফিস থেকে নতুন সংযোগের অনুমোদন প্রক্রিয়া যেমন দীর্ঘায়িত হচ্ছে, তেমনি অনুমোদন পাওয়ার পরও ইনচার্জের গাফিলতির কারণে ফাইল আটকে থাকছে। এমনকি, মিটার পরিবর্তনের জন্য মাঠ পর্যায় থেকে রিপোর্ট করা হলেও তা কার্যকর করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক মিটার রিডার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে বলেন, “সারা বছরের আর্থিক ঘাটতি পূরণের জন্য অর্থবছরের শেষ দিকে, বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে, অনেক সময় উপর থেকে বাড়তি বিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।”
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাকেরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বলেন, “মাঠপর্যায়ে রিডিং সংগ্রহে নিয়োজিত কর্মীদের কাজে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখব এবং সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”



