Uncategorizedঅপরাধকুমিল্লাদুর্নীতিদেশপ্রশাসনবাংলাদেশবিশ্লেষণমতামতসংগৃহীত সংবাদ

কুমিল্লায় সমালোচিত দুর্নীতিবাজ “সাংবাদিক খায়ের” এর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে ধীরগতি কোটি টাকায় রফার চেষ্টা অব্যাহত

আবুল খায়ের কুমিল্লায় সাংবাদিক জগতের কলংক এবং এক দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দালালের নাম।

এম শাহীন আলম: এই আবুল খায়ের গত ১৫টি বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে সাংবাদিকতার আড়ালে মানুষকে জিম্মি/ব্ল্যাকমেইল আর নিউজের ভয় দেখিয়ে আওয়ামী দলীয় দাপট খাঁটিয়ে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক।

সরজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, আবুল খায়ের এর সাংবাদিকতায় জীবনে তার কর্মরত প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিয়মিত কোন বেতনভাতা না থাকলেও স্যাটেলাইট টেলিভিশন আরটিভির লগো (বুম) ব্যবহার করে এবং দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে জাহির করে কুমিল্লা জেলা শহর সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার সরকারি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান, কুমিল্লার জেলার ডিবি অফিস, প্রতিটি থানা,ট্রাফিক বিভাগ,জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস,জেলা বিআরটিএ সার্কেল অফিস,পরিবহন সেক্টর,জেলা এবং সকল উপজেলার সাব- রেজিস্ট্রি অফিস সহ চোরাকারবারী চক্র, মাদককারবারী চক্র সহ সকল জায়গা চাঁদাবাজি করে অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে গড়েছেন তার গ্রাম বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়িতে বিলাস বহুল বহুতল বাড়ি। ব্যাক্তিগত ব্যবহারের প্রাইভেট গাড়ি সহ মার্কেট। এছাড়াও এই দুর্নীতিবাজ আবুল খায়ের সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটাকে পুঁজি করে আওয়ামী দলীয় দাপট খাঁটিয়ে অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন কোটি কোটি টাকা মূল্যের প্লট, ফ্ল্যাট সহ রাজধানী ঢাকায়ও রয়েছে তার একাধিক ফ্ল্যাট।

বর্তমানে কুমিল্লা জেলার সমালেচিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলবাজ আওয়ামী দোসর সাংবাদিক হিসেবে জেলা উপজেলার সকল সাংবাদিকদের কাছে পরিচিত নাম দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আরটিভি’র কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল খায়ের।

এই সৃজনশীল সম্মানীয় পেশা সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে এই আবুল খায়ের অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে গড়েছেন তার নিজ উপজেলা মুরাদনগর, দেবিদ্বার সহ কুমিল্লা সিটিতে বিলাস বহুল ফ্ল্যাট, বহুতল বাড়ি, গাড়ি, মার্কেট সহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার বর্তমান মূল্য অনুসন্ধানী তথ্য অনুযায়ী আনুমানিক শত কোটির মালিক এই আবুল খায়ের। কুমিল্লার স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন সাংবাদিক আবুল খায়ের এর পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলের মাসিক বেতন ভাতা কত? সে অনিয়ম আর দুর্নীতি ছাড়া কোন আলাদীনের চেরাগের শক্তিতে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার সম্পদের আয়ের উৎস কি?
সরজমিনে অনুসন্ধানে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, এই আবুল খায়ের সাংবাদিকতার সুবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কুমিল্লা মুরাদনগর আসনের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন সাথে তার পরিচয় হয়। স্থানীয় এমপি’র সাথে পরিচয় এবং সখ্যতা হওয়ার পর থেকে আবুল খায়ের আওয়ামী রাজনৈতিক বলয়ে ফ্যাসিস্ট এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এর সেল্টারে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

তার নিজ উপজেলা সহ কুমিল্লা জেলার সকল উপজেলার সরকারি অফিস সমূহ, থানা সমূহে তিনি আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করে নিউজের হুমকি দিয়ে গোপনে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
গত ২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট পর্যন্ত এই আবুল খায়ের আওয়ামীলীগের চিহ্নিত দালাল সাংবাদিক হিসেবে কুমিল্লা সকল জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজি সহ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ করে ব্ল‍্যাকমেইল করে হুমকি দমকি দিয়ে টাকা আদায় সহ অসংখ্য অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
সরজমিন অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলেই মুরাদনগরে এলাকার লোকজন আবুল খায়ের এর চাঁদাবাজী আর অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে এলাকা থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সমাবেশ সহ পুরুষ মহিলারা তার বিরুদ্ধে জুতা ও ঝাড় মিছিল করে তার বিচার চায়।
গত ২০২৪ সালের ৫ ই আগস্টের পর আওয়ামীলীগের দালাল আবুল খায়ের নিজের পিঠ বাঁচাতে এবং বিগত দিনের অপকর্ম ঢাকতে অবৈধ উপার্জনের কোটি কোটি টাকা দিয়ে জেলার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় আবুল খায়ের ট্রেডিং নামের একটি ব্যবসা শুরু করেছেন। যা বর্তমানে দৃশ্যমান।

চলতি বছরের ৪ ঠা মে বুধবার দুদকের কার্যালয়ের অনু ও তদন্ত -৫ উপপরিচালক ওমর ফারুকের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তা নিশ্চিত হওয়া যায়।

জানা যায়, দুদকের প্রধান কার্যালয়, ১ সেগুনবাগিচা, ঢাকা থেকে স্মারক নং- ০০.০১.১৯০০.৬২৫.০১.২৩৫.২৫/কুমিল্লা/২৮২৮৯, তারিখ ৪/৫/২০২৫ অনুযায়ী, অভিযোগটির গুরুত্ব বিবেচনায় কমিশন এটি তদন্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এই অনুসন্ধান কার্যক্রমের সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে: ১) পরিচালক ( স্বতন্ত্র অনুসন্ধান সেল), দুদক, প্রধান কার্যালয়ের স্মারক নং-০০.০১.০০০০.৫০৩.২৬.১৩১.২৫-৯৮৫, তারিখ ১৯/০৩/২০২৫; ২) দুদক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার ই/আর নং-মণ/তদন্ত-২/২৩৫/২০২৫/কুমিল্লা, তারিখ ২৫/০৩/২০২৫।

দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে উপপরিচালক কর্তৃক স্বাক্ষরিত চিঠিতে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রমটি দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ (সংশোধিত ২০১৯) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা তদারকি কর্মকর্তার দায়িত্বও পালন করছেন বলে জানা যায়।

এই চিঠির অনুলিপি নিম্নোক্ত কর্মকর্তাদের সদয় অবগতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে: ১. পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-৫), দুদক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা; ২. পরিচালক (দৈনিক ও স্বতন্ত্র অনুসন্ধান সেল), দুদক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা; ৩. পরিচালক (পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ), দুদক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা; ৪. পরিচালক, দুদক, বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম।

এ বিষয়ে অনু ও তদন্ত -৫ উপপরিচালক ওমর ফারুক জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আশা করা যাচ্ছে ।

আর অন্য দিকে দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দোসর আবুল খায়ের দুদকের সঠিক রিপোর্টটি বানচাল করতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং কুমিল্লার আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের কোটি টাকার বিনিময়ে রফা তদবির অব্যাহত রেখেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button