অপরাধদেশবাংলাদেশবিশ্লেষণরাজনীতি

দূর্গাপুরে মাদক সম্রাট আবুল বাশার বাদশা এখন বিএনপির পদধারী নেতা

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ৪ নং বিরিশিরি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বাদশাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাকে ইয়াবা জাতীয় মাদকদ্রব্য সেবন করতে দেখা গেছে বলে দাবি করছে স্থানীয়রা।

ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই উপজেলা ও বিরিশিরি ইউনিয়ন এলাকায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। বিএনপির স্থানীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষ বিষয়টি নিয়ে বিভক্ত মতামত প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রচারিত ছবি, আবার অনেকে বলছেন, ছবিটি সত্য এবং দীর্ঘদিন ধরেই বাদশা মাদক কেনাবেচা ও মাদকসেবনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল বাশার বাদশা দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও বিদেশি মদের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি একসময় দুর্গাপুর কাঁচা বাজার এলাকায় মুরগির ব্যবসার আড়ালে এসব মাদকদ্রব্যের চোরাচালান কারবারী চালাতেন। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও সেবনে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকেই তার আর্থিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে এবং বর্তমানে তিনি এলাকায় “মাদক সম্রাট” হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত টাকায় রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া বাদশা এখন টাকার জোরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। অতিরিক্ত মাদকাসক্তির কারণে তার পারিবারিক জীবনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে,  দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতিও তিনি দায়িত্বহীন আচরণ করছেন বলে জানা গেছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাদশা স্থানীয় এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার সহযোগিতায় অর্থের বিনিময়ে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিরিশিরি ইউনিয়নের যুব সমাজ ধীরে ধীরে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, যা সামাজিক অস্থিরতা বাড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে দূর্গাপুর উপজেলা বিএনপি ও বিরিশিরি ইউনিয়ন বিএনপির কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “ছবিটি দেখে আমরা বিস্মিত। বিষয়টি জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে।”
দুর্গাপুর থানার এক কর্মকর্তা বলেন, “ছবিটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে আবুল বাশার বাদশার ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, রাজনৈতিক নেতারা যদি মাদকসেবনের মতো অপরাধে জড়িত হন, তাহলে তা সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। তারা প্রশাসনের প্রতি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button