অপরাধএক্সক্লুসিভকুমিল্লাদুর্নীতিদেশপ্রতারনাবাংলাদেশমতামত

কুমিল্লায় জনস্বাস্থ্যের শত কোটি টাকা লোপাটের নায়ক নাসরুল্লাহ কামাল

এম শাহীন আলম: কুমিল্লা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ ও সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের উন্নয়নের নামে অর্থ লোপাটের সমন্বয়ক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আওয়ামী শাসনামলে শেষ চার বছরে শতকোটি টাকা সরকারি বরাদ্দের অর্থ লুটের অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ঠিকাদার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তথ্য সূত্র মতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে টেন্ডার বাণিজ্য, অযোগ্য ঠিকাদার দিয়ে কাজ, প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০২২ সালের ২৬ জুন পল্লী এলাকায় পানি সরবরাহ প্রকল্পের (দরপত্র আইডি ৭০৮৬৪২) কাজের আদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো ছয় মাসে, কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার লক্ষ্যে মাত্র চার দিনের মধ্যে (৩০ জুন) কাজটি সম্পন্ন দেখিয়ে আড়াই কোটি টাকার চূড়ান্ত বিল উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহ এবং কামাল গংদের বিরুদ্ধে। ওই প্রকল্পে ১০০টি গভীর নলকূপ ও সমান সংখ্যক আয়রন রিমুভাল প্ল্যান্ট স্থাপনের কথা ছিলো।
একই প্রকল্পের চারটি প্যাকেজে (আইডি ৭০৮৬৩৭, ৭০৮৬৩৮, ৭০৮৬৩৯, ৭০৮৬৪১) দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, অস্বাভাবিকভাবে কম অভিজ্ঞতা শর্ত এবং প্রাক্কলিত মূল্য কমিয়ে পছন্দের ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ঠিকাদাররা গণমাধ্যমকে জানান, কার্যাদেশ পেতে নাসরুল্লাহ ও কামাল হোসেন মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতিটি কাজে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নিতেন।

অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহ তার নামে বেনামে অর্থ সম্পদ সহ রাজধানী ঢাকায় বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লায় একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট ও বিলাসবহুল বাড়ির মালিক হয়েছেন। চট্টগ্রামের খুলশীতে পাঁচতলা ভবন রয়েছে তার কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে প্রায় ৫০ একর জমি এবং ঢাকার পূর্বাচলে ১০ কোটি টাকায় প্লট কেনার তথ্য স্থানীয় বিশ্বস্থ সূত্রে জানিয়েছে। নাসরুল্লাহ এর স্ত্রী সুরাইয়া সানজিদা চৌধুরী চট্টগ্রাম বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক এবং পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামেও বিপুল অঙ্কের লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়াও নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহর বিরুদ্ধে কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতিতে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দুদকের গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখিত একাধিক হোটেল ও রিসোর্টে ব্যক্তিগত বৈঠক করে এসব লেনদেন করতেন।

এই অভিযোগে জানতে নাসরুল্লাহকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
সরকারি অর্থ লোপাটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে কুমিল্লা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।

কুমিল্লা দুদকের সূত্র মতে জানা যায়, তারা সরকারি অর্থ লোপাটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে কুমিল্লা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছেন এবং ইতিমধ্যে একটি অভিযান পরিচালনা করে গোপন প্রতিবেদনও দাখিল করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button