ইসলাম ধর্মদেশবাংলাদেশমিডিয়াসংগৃহীত সংবাদ

“ব্যভিচারের মিথ্যা তহমত দেওয়া হয়েছে”: অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন আবু ত্বহা আদনান

অনলাইন ডেস্ক: সমসাময়িককালের আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান তার পারিবারিক সংকট এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তোলা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন। দীর্ঘ এক ফেসবুক পোস্টে তিনি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনা ব্যভিচারের অভিযোগকে “মিথ্যা তহমত” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং কসম করে তা অস্বীকার করেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার ও আইনি সমাধানের ইঙ্গিত

নিজের ফেসবুক পোস্টে আবু ত্বহা আদনান লিখেছেন, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পোশাকের মতো, যা একে অপরের দোষত্রুটি ঢেকে রাখে। তিনি দাবি করেন, স্বামী হিসেবে তিনি সেই দায়িত্বই পালন করে গেছেন। তিনি বলেন, “আল্লাহর কসম, আমি তাদের প্রতিটি অপবাদ ও মিথ্যাচারের লাইন ধরে ধরে জবাব দিতে সক্ষম,” তবে তিনি তা করবেন না এবং এর বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে আনা সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ—ব্যভিচার (যিনা)—সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, “আরশের মালিকের কসম! আমাকে গুছিয়ে একের পর এক মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে! কাবার রবের শপথ! আমি যিনাকার নই!!! মুহাম্মাদের রবের কসম! আমি ব্যভিচারী নই!” তিনি সাধারণ মানুষকে হুজ্জাত বা প্রমাণ ছাড়া কাউকে যিনার অপবাদ দেওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করে দেন, যা ইসলামে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আদনান জানান, তিনি দেশের বরেণ্য আলেমদের উপস্থিতিতে শরিয়াহ এবং আইনসম্মতভাবে বিষয়টি সমাধানের পথে হাঁটছেন। ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে আরও কোনো “ইলজাম, হেনস্থা বা মিথ্যা মামলার” শিকার হতে পারেন বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

সংকটের কারণ ও সন্তানদের জন্য আকুতি

পারিবারিক এই সংকটের পেছনে নিজের কিছু বিষয়কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার দোষ ভুল সত্ত্বায় মাত্রাতিরিক্ত মুহাব্বাত, উভয় পরিবারের মাঝে সুন্নাহসম্মত ইনসাফ করতে চাওয়া… দিনের পর দিন ক্ষতবিক্ষত হয়ে নিজের প্রয়োজন ও মানসিক প্রশান্তির আশায় সুলাসা (সমাধান) করতে চাওয়া!” তিনি উল্লেখ করেন, তার এই সমাধানের চেষ্টায় তার প্রথম স্ত্রী, মা এবং বোন সম্মত ছিলেন।

পোস্টের একটি বড় অংশজুড়ে ছিল তার দুই সন্তানের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও আকুতি। তিনি লেখেন, “কোটি মানুষের শহরে আমার দুটো সন্তান আছে! দোয়া করবেন তাদের বাবা যেন তাদের থেকে মাহরুম না হন!” তিনি তার দুই সন্তান, আয়েশা এবং উসমানের নাম উল্লেখ করে তাদের প্রতি নিজের অপরিসীম ভালোবাসার কথা জানান, যাদের মুখের দিকে তাকিয়েই তিনি এতদিন সবর করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

সবশেষে, তিনি তাকদির বা ভাগ্যের ফয়সালাকে মেনে নেওয়ার কথা বলে লেখেন, “হয়তো কিছু বিচ্ছেদেই শান্তি থাকে, আর নিশ্চয়ই কষ্টের পরেই স্বস্তি থাকে!” তিনি জালেম ও মজলুমের মধ্যে আল্লাহর কাছে উত্তম ফয়সালার জন্য প্রার্থনা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button