রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের মর্যাদা ও সুরক্ষার দাবি: সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল প্রবাসীদের ১২ দফা

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি যাদের পাঠানো রেমিট্যান্স, সেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করে আসছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ, হতাশা ও অধিকারের আর্তি ফুটে উঠেছে ১২ দফা দাবির একটি তালিকাকে ঘিরে, যা দ্রুতই ভাইরাল হয়েছে।
এই দাবিগুলো নিছক কোনো আবেদন নয়, বরং বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এই মানুষগুলোর প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্যের এক জোরালো স্মারক। নিচে তাদের উত্থাপিত প্রধান দাবিগুলো তুলে ধরা হলো:
মর্যাদা ও সম্মান:
- মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে প্রেরণ: কোনো প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
- বিমানবন্দরে ভিআইপি মর্যাদা: দেশের বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য ‘ভিআইপি’ (VIP) মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
আর্থিক সুরক্ষা ও সুযোগ:
- বিমান ভাড়া হ্রাস: আকাশপথে চলাচলের জন্য বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে।
- অবসর ভাতা: ন্যূনতম ১২ বছর বিদেশে কর্মরত থাকার পর দেশে ফিরলে প্রবাসীদের জন্য পেনশন বা অবসর ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
- সহজ শর্তে ঋণ: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সহজ ও শর্তহীন ঋণ সুবিধা প্রদান করতে হবে।
- ভিসার মূল্য নির্ধারণ: সকল প্রকার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ভিসার খরচ একটি সহনীয় এবং নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
নিরাপত্তা ও নাগরিক সেবা:
- পারিবারিক নিরাপত্তা: প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে দেশে অবস্থানরত তাদের পরিবারের সদস্যদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।
- উন্নত চিকিৎসা: প্রবাসীদের জন্য দেশে উন্নত ও বিশেষায়িত চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে হবে।
- প্রবাসী স্মার্ট কার্ড: সকল প্রবাসীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘প্রবাসী স্মার্ট কার্ড’ প্রদান করতে হবে।
- দালালমুক্ত পাসপোর্ট সেবা: কোনো প্রকার দালালের হয়রানি ছাড়া দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
শুল্কনীতি শিথিলকরণ:
- মোবাইল ফোন: বিদেশ থেকে ফেরার সময় ন্যূনতম চারটি মোবাইল ফোন শুল্কমুক্ত আনার সুবিধা দিতে হবে।
- টেলিভিশন: কমপক্ষে ৪০ ইঞ্চি আকারের একটি টেলিভিশন শুল্কমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রবাসীদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ প্রবাসী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রবাসী সংগঠন। তারা মনে করেন, যারা দেশের জন্য এত বড় ত্যাগ স্বীকার করছেন, তাদের প্রতি রাষ্ট্রের আরও সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।



