Uncategorizedদেশবাংলাদেশমতামত

সোনালী ব্যাংক পিএলসির মুর্তিমান আতঙ্ক ফ্যাসিস্ট দোসর নাজিম উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অন্যান্য  ব্যাংকগুলোতে ফ্যাসিস্ট দোসরদের রাহুর গ্রাস কাটলেও দেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক এখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের কব্জায়। আবার অনেকে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী দোসরদের  বিএনপি’র লেবাস লাগিয়ে নব্য বিএনপি বানিয়ে তাদের হাতে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। 

সূত্র বলেছে, সোনালী ব্যাংক পিএলসি প্রিন্সিপাল অফিস চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল এর সিনিয়র অফিসার  মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন একসময়  আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন  সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কার্যনির্বাহী পরিষদের কার্যকারী সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। আপাদমস্তক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন  ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লেবাসে নিজেকে জাহির করে আওয়ামী সোনালী ব্যাংক পিএলসিকে আওয়ামী তন্ত্রের পরিচালনা করেছেন। সেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিএনপি বানানোর কারিগর হয়ে উঠছেন। 

নিজে‌ বিএনপি কতিপয় অসাধু নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে  ৫ আগস্ট পরবর্তী বাগিয়ে নিয়েছেন জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক  সম্পাদকের পদ ও চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ।

সুত্র আরো জানায়, সোনালী ব্যাংক পিএলসি প্রিন্সিপাল অফিস চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল এর সিনিয়র অফিসার  মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ভোল্ট পাল্টে শুধু নিজ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক  সম্পাদকের পদ দখল করে ক্রান্ত হননি। বাগিয়ে নিয়েছেন 

বিএনপির অঙ্গ সংগঠন সোনালী ব্যাংক এসোসিয়েশন (সিবিএ) এর উপদেষ্টার পদ। এছাড়াও  তিনি নিজের আস্থাভাজন অপরাপর আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইতিমধ্যে তিনি তার আস্থা ভাজন‌ সোনালী ব্যাংক পিএলসি আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখার এওজি-১ (ক্যাশ) মোহাম্মদ নুরুল ইসলামকে সোনালী ব্যাংক এসোসিয়েশন (সিবিএ) এর সভাপতি করেছেন। 

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু আদর্শের সংগঠন বি ২০২ এর অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনকে করেছেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন সোনালী ব্যাংক এসোসিয়েশন (সিবিএ) এর বঙ্গবন্ধু আদর্শের সংগঠন বি ২০২ এর সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মালেককে বানিয়েছেন প্রচার সম্পাদক। একি সংগঠনের সহদপ্তর সম্পাদক নাজির নয়নে সাংগঠনিক সম্পাদক, দাবি এবং সমস্যা বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আইয়ুবকে অর্থ সম্পাদকসহ আরো অনেককে এমপ্লয়ী ইউনিয়ন ৬৬৪ এর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন আপাদমস্তক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি সমর্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, সোনালী ব্যাংক পিএলসির  অনুমোদিত জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম জেলা কমিটি থাকা সত্ত্বেও ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসিত করতে পাল্টা জিয়া পরিষদ চট্টগ্রাম নামে আর একটি জিয়া পরিষদ নামে কমিটি গঠন করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।  এক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট  আর এক দোসর চট্টগ্রাম রেলওয়ে শাখার এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ইয়াছের আরাফাত। এই আরাফাত ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে থাকাকালীন সময়ে  অফিসার্স কোয়াটারের ফ্ল্যাট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নামে বরাদ্দ নিয়ে  আওয়ামী ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর ডি জি এম মোঃ শাহিন মিয়া এবং অলক কুমার বলকে  মাত্র ৩০ টাকার বিনিময়ে এসি রুমের ফ্ল্যাটে বছরের পর বছর থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে ব্যাংকের লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি করেছেন।

 অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সরকারি চাকরী হয়ে গড়ে তুলেছেন  গাড়ির রমরমা ব্যবস্যা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক কর্মকর্তাদের তার কাছ থেকে গাড়ি কিনতে বাধ্য করেন অন্যথায় তাদের উপর করেন নানা মুখী নির্যাতন।  তিনি ঠিকমতো অফিস করেছেন কবে এমনটিও সঠিক ভাবে বলতে পারেন না কেউ। যা সিসি টিভিতে দেখলে বুঝা যাবে তিনি অফিসে কখন আসেন এবং বের হন। ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ৫ আগস্ট পরবর্তী  অফিস না করে বিভিন্ন শাখায় গিয়ে শাখা ম্যানেজারদের কে হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। বিশেষ করে টাকার বিনিময়ে তিনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সরকার ম্যানেজারকে ব্যাংকের কোনোরূপ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে রিপিটেড পোস্টিং করান। 

এছাড়াও ফ্যাসিস্ট দোসর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সৈয়দুল আলম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিনকে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চন্দ্রঘোনা এবং কর্ণফুলী শাখায় বদলি করতে সহায়তা করেন। সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলামকে তার ছত্রছায়ায় এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রেখেছেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ থেকে টি অর্ডারের মাধ্যমে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, এবং অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রেখছেন তাদের পোস্টিং দূরবর্তী শাখা থেকে কাছে এনে দেওয়ার জন্য।

সপ্তাহে ১-২ বার কিছুক্ষণের জন্য অফিস এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে তিনি লাঞ্চ ভাতা নিচ্ছেন এক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার  খন্দকার মাজহারুল কবির এবং এজিএম মোঃ মাহবুবুল হক। তিনি কাউকেই পরোয়া করেন না, বর্তমানে তার এসব কর্মকাণ্ডে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ একপ্রকার আতঙ্কে অফিস করছেন। 

গত ২০ অক্টোবর চট্টগ্রামের বহুল প্রচলিত দৈনিক সাঙ্গু পত্রিকায় বন্দর থানা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি শীর্ষক এক প্রতিবেদনে পরিবহন‌ চাঁদাবাজ হিসেবে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নাম উঠে আসে। এছাড়াও জাতীয় দৈনিক নব চেতনার‌ বন্দর থানা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত পাতিনেতারা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে পরিবহন‌ চাঁদাবাজ হিসেবে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নাম ফলাও করে ছাপানো হয়। অভিযোগ আছে, 

সোনালী ব্যাংক  আগ্রাবাদ ভবনে রিনোভেশন কাজে নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদারকে চাঁদার জন্য চাপ দেওয়াসহ  তার নামে গালিগালাজর‌ অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা  সম্প্রতি নাজিম উদ্দিনের চাঁদাবাজির বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নজরে আনলে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল সোনালী ব্যাংকে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন ।  কথিত আছে এসময়  তিনি ডিজিএম মাজহারুল কবিরের টয়লেটে আত্মগোপন করেন এবং সুযোগ বুঝে শটকে পড়েন। সেনাবাহিনীর হাত থেকে তাকে রক্ষা করেন জিএম অফিস চট্টগ্রাম নর্থ এর জিএম মোঃ মুসা খান। মুসা খানের সহযোগিত এ যাত্রায় তিনি বেঁচে যান।

উল্লেখ্য গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ও আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেন । এই নাজিমউদ্দিন শুধু ব্যাংকেই বিএনপি’র প্রভাব দেখাচ্ছে না অত্র চট্টগ্রাম মহানগর ও তার রয়েছে বিএনপি’র একটি সক্রিয় টিম যা তাদেরকে ব্যবহার করেই দিন দিন বেপরো হয়ে উঠছে এই নাজিম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button