
একাধিক গণমাধ্যম নিউজ প্রকাশ হলেও কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক নিরব
এম শাহীন আলম: গত ২০২৪ সালে আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শামীম আহমেদ এর যোগদানের শুরু থেকেই তার অদৃশ্য যোগসাজশে অনিয়ম আর গ্রাহক হয়রানি সহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
আঞ্চলিক ভাষায় একটা প্রবাদ আছে ” বেড়া দিয়েছে ক্ষেত পাহারা দেওয়ার জন্য সরজমিনে দেখা যায় সেই বেড়াই পাহারার বদলে ক্ষেতের অস্তিত্ব বিলীনে ব্যস্ত “।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ডান বামে আবেদনের ছলে দোকান খোলে বসে থাকা কম্পিউটার দোকানীদের সাথে কথা বললে তারা জানান,কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া লাইনে দাঁড়াতে হবে না কম্পিউটার দোকানীর নাম বললেই হবে। কম্পিউটার দোকানী আরো জানান,নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের তিনি হোয়াইটসঅ্যাপে কল করে বলে দিবে এছাড়াও স্যাররা কাগজপত্র দেখলেই বুঝবে যে, তিনি পাঠিয়েছেন, স্যারদের কিছুই বলতে হবে না, কাগজপত্রে কোন ভুল থাকলেও সংশোধন করে নিবে বিনিময়ে রেগুলার একটি পাসপোর্টে একদাম সাড়ে ৮ হাজার লাগবে এমন একেই কথা দুইজন দোকানী বলেন। আর সরাসরি অনলাইনে আবেদন করে জমা দিতে গেলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা লাগবে তবে হয়রানি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও এক দোকানী জানান।
সরজমিনে অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, পাসপোর্ট অফিসের আশপাশের কম্পিউটারে আবেদনকারী দোকানীরা ছাড়াও ছাড়াও পাসপোর্ট অফিসের বোকার বা দালাল হিসেবে সরাসরি কাজ করছেন নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে নিরাপত্তার নিয়োজিত প্রতিটি আনসার সদস্য। সরেজমিনে পাসপোর্ট অফিসের মেইন গেইটে ঢুকতেই আনসার সদস্য মিথুন এর সাথে দেখা, সরজমিনে দেখা যায়, আনসার সদস্য মিথুন তিনি নিজেই সরাসরি বাহিরের দালাল সহ সেবাগ্রহীতাদের সাথে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া পারসোনাল ভাবে রেগুলার প্রতিটি পাসপোর্ট ৮ হাজার টাকা রফা করে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দালাল এবং গ্রাহকদের সাথে প্রকাশ্যে রফাদফা করছে, এবং অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক এম শাহীন আলম এর সাথেও দুইটা পাসপোর্ট ৮হাজার টাকার বিনিময়ে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া পারসোনাল ভাবে করে দিবেন বলে জানিয়ে মিথুন তার মোবাইল নাম্বারটি এম শাহীন আলম কে দেন। সরজমিনে আরো দেখা যায় আনসার সদস্য মিথুন তার আরেক সহযোগী রঞ্জু ও মিথুনের পাশাপাশি পাসপোর্টের দালাল হিসেবে কাজ করছে। পাসপোর্ট অফিসের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, মিথুন আর রঞ্জুর দালালীর কাজে সহযোগিতায় ভিতরের অফিসারদের সাথে রফা সহ ফাইল পত্র নিয়ে কথা বলা এবং মিথুন আর রঞ্জুর লোকদের সহযোগিতায় দালালীতে ব্যস্ত আরেক আনসার সদস্য সাইদুর।
সরজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তার নিয়োজিত প্রতিটি আনসার সদস্য ই পাসপোর্টের দালাল হিসেবে সরাসরি জড়িত। বাহিরে কম্পিউটার দোকানীরা আবেদনে একটি সাংকেতিক চিহৃ ব্যবহার ছাড়াও তারা ভিতরের অফিসারদের হোয়াইটসঅ্যাপে আবেদনের ছবি তুলে পাঠিয়ে সরাসরি দালাল হিসেবে কাজ করেন অনুসন্ধান উঠে আসে।
সরজমিনে অনুসন্ধানে সেবাগ্রহীতারা সহ বেশ কয়েকজন দালালও আনসার সদস্য মিথুন, রঞ্জু আর সাইদুর এর সাথে রফা করে পাসপোর্টের আবেদনের কাগজপত্র জমা দিতে দেখা যায়। সরজমিনের গ্রাহকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সরাসরি আবেদন করে কাজ করতে গেলে ভিতরে একটার পর একটা অজুহাতে ভুল ধরে বার বার আবেদন কাগজপত্র সংশোধন করার জন্য চরম হয়রানির শিকার হওয়ার ভয়ে তারা দালালের মাধ্যমে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া বারতি টাকা দিয়ে রফা করে পাসপোর্ট করতে হয়।
সরজমিনে আরো জানা যায়, বর্তমানে উপপরিচালক শামীম আহমেদ যোগানের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালাল চক্র,ঘুষ বাণিজ্য সহ অনিয়ম বিরুদ্ধে একাধিক গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশ করার পরও কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে জানা যায়।
সরজমিনে পাসপোর্ট অফিসটিতে সংবাদকর্মী পরিচয়ে গেইটের ভিতরে ঢুকা এক প্রকার নিষেধের মতোই অবস্থা।
সরজমিনে আরো জানা যায়, বিগত দিনে এই পাসপোর্ট অফিসটিতে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি এই পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। এর পর থেকেই কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। দুর্নীতিতে জড়িত অনেকেই নিজেদের কার্যক্রম গোপন রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। সেই আতঙ্ক থেকেই সাংবাদিকদের সরাসরি প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রাখা হচ্ছে।
সরজমিনে অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, কিছু দিন আগে দুইজন সংবাদকর্মী পরিচয়ে পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করতে গেলে তাদের গেটে আটকে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ ও উপ-সহকারী ফারুকের নির্দেশে গেটের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য সহ কর্মচারীরা তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। এমনকি সেখানে উপস্থিত দালাল চক্র সাংবাদিকদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশে সংবাদকর্মীদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সেবাগ্রহীতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতি বেড়েছে, আর সেবার মান কমেছে। তার যোগদানের আগে অনেকে ভেবেছিলেন পাসপোর্ট অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ফিরে আসবে। কিন্তু উল্টো সেখানে বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির মাত্রা বহুগুণে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, শামীম আহমেদের অতীত নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, তিনি ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আছে।
সেবাগ্রহীতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উপ-সহকারী পরিচালক নানাভাবে প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কিছু অসাধু সাংবাদিককে টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তাদেরকে প্রতি মাসে বেশ মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে থাকেন এই ফারুক, যাতে তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ তুলতে না পারে। জানা যায়,নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপপরিচালক শামীম আহমেদ এর অদৃশ্য যোগসাজশে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক দালাল চক্র সিন্ডিকেট।
সরজমিনে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে, সার্বিক বিষয়ে জানতে উপপরিচালক শামীম আহমেদ এর কক্ষে প্রবেশ করে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে ডিডি শামীম আহমেদ কাজের অজুহাতে কথা বলতে রাজি হননি। পরে কথা বলবে বলে তিনি তার মোবাইল নাম্বারটি একটি কাগজে লিখে দেন।
পরক্ষণে ডিডি শামীম আহমেদ এর হোয়াইটস অ্যাপে আনসার সদস্যদের অনিয়মের ভিডিও গুলার পাঠালে তিনি বলে এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আপনি যেহেতু জানিয়েছেন আমি আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করে দেবো। শামীম আহমেদ কে যখন আরো প্রশ্ন করা হয় তখন তিনি মোবাইল কলটি কেটে দিয়ে একাধিক বার তাকে কল দিলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে আনসার সদস্যদের ভিডিও গুলা আনসার সদস্য মিথুন এর মোবাইলে পাঠালে একজন আনসার কমান্ডার পরিচয়ে নিউজ না করতে রফা করার চেষ্টা করে প্রতিবেদক এম শাহীন আলম এর মোবাইল নাম্বারটি বিকাশ নাম্বার মনে করে কিছু টাকাও পাঠান এবং পাসপোর্ট অফিস নিয়ে বাড়াবাড়ি না করলে মাসে মাসে একটা সন্মানি নগদ টাকা দিবেন বলেও প্রস্তাব দেন আনসার কমান্ডার পরিচয়ে এক ব্যক্তি। সাংবাদিক এম শাহীন আলম কে ম্যানেজ করতে না পেরে তারা দলবল সহ সাংবাদিক নিয়ে অপরাধ বিচিত্রা অফিসে পত্রিকাটির সম্পাদক এস এম মোরশেদ এর নিকট শরণাপন্ন হয়ে সেখানেও তারা ব্যর্থ হন।



