সাভারে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষ, একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ

সাভার (প্রতিনিধি): ঢাকার সাভার উপজেলার আমিন বাজার এলাকায় আদালতের রায়প্রাপ্ত ও নিজ নামে নামজারি সম্পন্ন করা জমি জোরপূর্বক দখল নিতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জমির প্রকৃত মালিক মো. মাসুদ রানা (৩৪) গুরুতর আহত হয়েছেন, যার বাম হাত ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের একাধিক স্থানে আঘাত লাগে। এ ঘটনায় একাধিক চিহ্নিত ব্যক্তি ও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। চিকিৎসার জন্য তিনি স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে ভর্তি হন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাসুদ রানা তার বাবা হাজী মোহাম্মাদ কমর আলীর নামে ধোবাইর, বেগুনবাড়ী, আমিন বাজারের মোট ৭০৯ শতাংশ (শতাংশ) জমির বৈধ মালিক। দীর্ঘদিন ধরেই একটি চক্র জাল দলিলের মাধ্যমে এই সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের পাঁয়তারা করছিল। এই দখলদারিত্ব রুখতে মাসুদ রানা ২০১৫ সালে ঢাকা যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা (মামলা নং ৬০৪/২০১৫) দায়ের করেন এবং আদালত থেকে জাল দলিল বাতিলের ডিগ্রি লাভ করেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট রেজিস্ট্রি অফিসে জাল দলিলটি (দলিল নং ৬১৯০/২০১১) বাতিল করা হয়। এমনকি, সাভার সহকারী ভূমি অফিস থেকেও জাল দলিলের নামজারি বাতিল করে মামলা নং ৫৭৪/২২-এর মাধ্যমে নিজের নামে নামজারি সম্পন্ন করেন তিনি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ রোজ মঙ্গলবার আনুমানিক দুপুর ১২:০০টার সময় বিবাদীরা দলবদ্ধভাবে তার আইনগতভাবে বৈধ এবং বাতিলকৃত দলিলভুক্ত জমিটি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে যায় বলে অভিযোগ করেন মাসুদ রানা। তিনি এতে বাধা প্রদান করলে, অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও কিল-ঘুষি দিয়ে মাসুদ রানাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
মারধরের ফলে মাসুদ রানা গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। তার কাঁধে মারাত্মক আঘাত লাগে, ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে, মাথা ফুলে যায় এবং বাম হাত ভেঙে যায়। মারধরের পর অভিযুক্তরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে সাভারের একটি স্থানীয় ফার্মেসিতে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে দেন।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শ ও আলোচনার ভিত্তিতে ভুক্তভোগী মাসুদ রানা শেষমেশ সাভার মডেল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভাকুর্তা ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) বিলায়েত হোসেন বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের অভিযোগই আমলে নিয়েছি। দুই পক্ষকেই ডেকে এনে তাদের বক্তব্য শোনা হয়েছে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”



