
কালিমুল্লাহ ইকবাল: আব্দুল্লাহপুর–টঙ্গী–গাজীপুর অঞ্চলের জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী জরাজীর্ণ সড়ক সংস্কার এবং তুরাগ নদীর ওপর একটি নতুন সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবিতে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোসাইটি অব ন্যাশনাল মিডিয়া কমিশন (জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন) কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বক্তারা একে একে এলাকার ভয়াবহ অবকাঠামোগত পরিস্থিতি তুলে ধরে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর অঞ্চলের মানুষের জীবন আজ চরম দুর্ভোগের প্রতীক। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তুরাগ নদীর দুই পাড়ে যাতায়াত করেন। পূর্বে নদীর ওপর দুটি বেইলি ব্রিজ থাকলেও এর মধ্যে একটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। অবশিষ্ট একমাত্র সেতুটিও অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় টিকে আছে, যা দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের চলাচল চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলস্বরূপ, কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং মুমূর্ষু রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বক্তাদের মতে, বিশেষ করে টঙ্গী বাজারের প্রবেশদ্বার থেকে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রধান সড়কটির বেহাল অবস্থা জনজট, যানজট এবং দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। গর্তে ভরা রাস্তা, জমে থাকা পানি ও ধুলাবালির কারণে ভারী যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ায় এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাফেরা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তারা প্রশ্ন তোলেন, একদিকে রাস্তার অচলাবস্থা এবং অন্যদিকে সংযোগ সেতুর অভাবে রাজধানীর পাশে অবস্থিত এত গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকতে পারে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জোর দাবি জানান, দ্রুত নতুন সংযোগ সেতু নির্মাণ, অবশিষ্ট বেইলি সেতুর সংস্কার এবং আব্দুল্লাহপুর–টঙ্গী–গাজীপুর অঞ্চলের প্রধান সড়কসমূহের জরুরি পুনর্নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। একইসঙ্গে তারা স্থানীয় নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে অস্থায়ী শৌচাগার স্থাপন, চুরি-ছিনতাই রোধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, পর্যাপ্ত সড়ক বাতি ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বৃদ্ধি এবং ঢাকা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগের দাবি জানান। এছাড়াও, বর্ষা ব্যতীত শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত জল ছিটানোর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, মানুষের মৌলিক চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে উন্নয়নের যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।”
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি এ.কে.এম আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি কালিমুল্লাহ ইকবাল, সহ-সভাপতি মোঃ মুসলেহ উদ্দিন বাচ্চু (ঢাকা প্রেসক্লাব), মহিবুল্লাহ সোহেল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কামাল খান, প্রচার ও মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক তানজিরুল এইচ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আর.কে. রুবেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এম বিল্লাহ শিশির, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান, আজহার হুসাইন, সদস্য জুয়েল মিয়া, মানবাধিকার কর্মী আসলাম মোরল, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আহমেদ-সহ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।



