আইন ও বিচারজাতীয়প্রশাসন

শুনানি ছাড়াই আপিল খারিজ: ন্যায়বিচারের প্রশ্ন উঠছে

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে কোনো ব্যক্তি যখন জেলা জজ আদালতে আপিল করেন, তখন আইন অনুযায়ী সেই আপিলের প্রাথমিক পরীক্ষা করা হয়। আদালত চাইলে প্রাথমিক পর্যায়েই দেখে নিতে পারেন আপিলের যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য। যদি আদালতের কাছে মনে হয় আপিলের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই, তাহলে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে (summarily) শুনানি ছাড়াই আপিল খারিজ করতে পারেন—এটাই আইন।তবে এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যদি আপিলে যুক্তিসঙ্গত কারণ থেকে থাকে, অথচ আপিলকারীকে না জানিয়ে বা তার বক্তব্য শোনার সুযোগ না দিয়েই মামলাটি খারিজ করা হয়, তাহলে সেটি কি ন্যায়সংগত?আইনজীবীরা বলছেন—না, এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। বাংলাদেশের সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থায় ‘ন্যায্য শুনানির অধিকার’ (Right to fair hearing) একটি মৌলিক নীতি। ফৌজদারি কার্যবিধির (CrPC) ধারা ৪২১ এবং দেওয়ানি কার্যবিধির (CPC) Order 41 Rule 11–এ স্পষ্টভাবে বলা আছে, আপিল খারিজের আগে আপিলকারী বা তার আইনজীবীকে অন্তত সংক্ষিপ্তভাবে শুনানি দেওয়ার সুযোগ থাকতে হবে।শুনানি ছাড়া বা নোটিশ না দিয়েই যদি আদালত আপিল খারিজ করে দেন, তাহলে সেটি “ন্যায়বিচারের লঙ্ঘন” হিসেবে গণ্য হয় এবং সেই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে (High Court Division) রিভিশন বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যায়।আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আপিল আদালতের দায়িত্ব শুধু মামলার নথি দেখা নয়—বরং আপিলকারীর বক্তব্য শোনা, যুক্তিগুলো যাচাই করা এবং ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দেওয়া। তাই আপিল করার যথাযথ কারণ থাকা সত্ত্বেও যদি কাউকে না জানিয়ে তার আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়, সেটি ন্যায় নয়—অন্যায়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button