বিশ্ববৈশ্বিকসংগৃহীত সংবাদসম্পাদকীয়

স্বাস্থ্য সনদ ছাড়া হজ নয়: নতুন শর্ত জুড়ে দিল সৌদি আরব

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: আসন্ন হজ মৌসুমের প্রস্তুতি হিসেবে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরূপণে নতুন ও কঠোর নিয়ম প্রবর্তন করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এখন থেকে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা-সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্র বা সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

মন্ত্রণালয় হজযাত্রী প্রেরণকারী সব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে, তারা যেন প্রতিটি হজযাত্রীর সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে হজযাত্রীরা শারীরিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে হজ পালনের জন্য সম্পূর্ণরূপে উপযুক্ত।

সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিছু দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি এবার হজ পালনের সুযোগ পাবেন না। মন্ত্রণালয় বাংলাদেশসহ সব দেশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে, যে ক্ষেত্রে হজের অনুমতি মিলবে না।

সৌদি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাদের শরীরের প্রধান অঙ্গগুলো অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে, তারা হজের অনুমতি পাবেন না। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লিখিত শর্তগুলো হলো:

  • ডায়ালাইসিস চলছে এমন কিডনি রোগ
  • গুরুতর হৃদরোগ
  • সবসময় অক্সিজেন প্রয়োজন হয় এমন ফুসফুসের রোগ
  • ভয়াবহ লিভার সিরোসিস
  • গুরুতর স্নায়বিক কিংবা মানসিক রোগ, স্মৃতিভ্রষ্টতাসহ অতি বয়স্কতা
  • শেষ প্রান্তিকের বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনো গর্ভাবস্থা।

এছাড়াও, যক্ষ্মা (টিবি) এবং ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বরের মতো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হজ করার অনুমতি পাবেন না। ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে কেমোথেরাপি কিংবা অন্য কোনো নিবিড় ইমিউনোথেরাপি গ্রহণ করছেন এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও সৌদি সরকার হজের অনুমতি দেবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হজযাত্রী প্রেরণকারী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত প্রত্যয়ন করে ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য আবশ্যিকভাবে বৈধ স্বাস্থ্য সনদ ইস্যু করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আগমন ও বহির্গমন প্রান্তে মনিটরিং দল নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইস্যুকৃত স্বাস্থ্য সনদের সত্যতা ও যথার্থতা যাচাই করবে। যদি কোনো দেশের একজন হজযাত্রীর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি পাওয়া যায়, তবে সে দেশের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় সংশোধনমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এই প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মসৃণ ও নিরাপদ হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত এই বিধিনিষেধগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজের নিবন্ধন না করার জন্য নিবন্ধন শুরুর আগেই মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল এবং হজ এজেন্সিগুলোকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নিতে সৌদি সরকারের অনুরোধে সে দেশে অনুষ্ঠিত একটি ওয়ার্কশপে দুজন বাংলাদেশি চিকিৎসক বর্তমানে অংশ নিচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button