চট্টগ্রামদেশমিডিয়াস্বাস্থ্য

চসিকের টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে রেকর্ড: ৯৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কাল শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এলাকায় পরিচালিত “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৫” সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। এই ক্যাম্পেইন শেষ হওয়ার একদিন আগেই কর্তৃপক্ষ মোট লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ শতাংশ শিশুকে টাইফয়েড টিকার আওতায় এনেছে। বৃহস্পতিবার এই ক্যাম্পেইনটি আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হতে চলেছে।

চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা বাংলাদেশে টাইফয়েড টিকাদানের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৯১ শতাংশ, সেখানে চসিক ৯৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে জাতীয় গড়ের চেয়ে ২ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আগামীকাল শেষ দিনের মধ্যে এই হার ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হবে।

টিকাদান কার্যক্রমে জোনভিত্তিক সাফল্যের হারও তুলে ধরেছে চসিক। আগ্রাবাদ জোনে শতভাগ শিশুকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মেমন জোনে ৯৯ শতাংশ, উত্তর কাট্টলি জোনে ৯৭ শতাংশ এবং বন্দর জোনে ৯৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তবে কাপাসগোলায় ৮৬ শতাংশ এবং পাঁচলাইশ জোনে ৭৪ শতাংশ টিকাদান সম্পন্ন হওয়ায় কর্তৃপক্ষ কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ চসিক কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ের সমন্বয় কমিটির দ্বিতীয় কো-অর্ডিনেশন সভায় এই তথ্যগুলি উঠে আসে। চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, ইউনিসেফ কনসালটেন্ট ডা. সারোয়ার আলম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর এসআইএমও ডা. খাদিজা আহমেদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বক্তারা সভায় শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে টিকাদান কর্মসূচির সফলতার ওপর জোর দেন। তারা বলেন, টাইফয়েড একটি অত্যন্ত মারাত্মক রোগ, যা প্রায়শই সাধারণ জ্বর ভেবে ভুল করা হয় এবং শিশুদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে অঙ্গহানির কারণ হতে পারে। এই টিকা বাইরে নিতে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা খরচ হলেও, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করছে। বক্তারা জানান, নগরীর কিছু এলাকায় অভিভাবকদের অনাগ্রহের কারণে টিকা গ্রহণের হার সন্তোষজনক নয়। তাই আগামীকাল শেষ দিনের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণের জন্য সবাইকে নিজ নিজ শিশুদের টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, কমিউনিটি পর্যায়ে এই টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আওতাধীন ১,৫৪৬টি স্কুল ও ৭৮৩টি আউটরিচ সাইটে প্রায় ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩০১ শিশুকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩১ হাজার ১৬৭ জন স্কুলগামী এবং ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮৪ জন স্কুলবহির্ভূত শিশু।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে এই গুরুত্বপূর্ণ ক্যাম্পেইনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button