Uncategorizedঢাকাবিশ্লেষণ

ঢাকায় প্রতারক চক্রের নিত্যনতুন ফাঁদ: নাগরিকদের জন্য ১০টি জরুরি সতর্কতা

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: ঢাকা মহানগরীতে চলাচলকারী এবং বাইরে থেকে আসা সাধারণ মানুষদের জন্য প্রতারক চক্রের নিত্যনতুন ফাঁদ সম্পর্কে চরম সতর্কতা জারি করা হলো। রাজধানী ও এর আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নানা কৌশলে সক্রিয় রয়েছে অপরাধী চক্র, যাদের সামান্য অসতর্কতার সুযোগ পেলেই ভ্রমণকারীদের সর্বস্ব কেড়ে নিতে পারে। বড় ধরনের বিপদ এড়াতে ঢাকাবাসীকে এবং যারা ঢাকায় আসবেন, তাদের জন্য নিম্নলিখিত ১০টি বিষয়ে জরুরি সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য:

১. ফার্মগেট এলাকায় সংঘবদ্ধ প্রতারণা: ফার্মগেটে কাউকে মারধর করতে বা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে দেখলে সহজে এগিয়ে যাবেন না। এটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ফাঁদ হতে পারে, যেখানে সহানুভূতি দেখাতে গিয়ে আপনি নিজেই সর্বস্ব হারাতে পারেন।

২. ওভারব্রিজে মিসকলের ফাঁদ: ওভারব্রিজে কোনো মহিলাকে কাঁদতে দেখে তার মোবাইল ফোনে ‘মিসকল’ দেওয়ার অনুরোধে সাড়া দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। আপনার মোবাইল ব্যবহার করে চক্রটি পরবর্তীতে লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে বা অন্য উপায়ে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।

৩. যানজটে লিফলেট প্রতারণা: শাহবাগ, মহাখালী ও যাত্রাবাড়ীর মতো যানজটপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় লিফলেট (যেমন: রোগ, দুর্বলতা, রুম ডে/ডেট সংক্রান্ত) বিতরণ করে আপনাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হতে পারে। এগুলোতে সাড়া দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৪. বোরকা পরা নারীর প্রলোভন: বোরকা পরিহিত নারীর ইশারায় আকৃষ্ট হয়ে তাদের সঙ্গে গেলে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানোর ঝুঁকি রয়েছে। এ ধরনের প্রলোভন কঠোরভাবে এড়িয়ে চলতে হবে।

৫. ঘাটে জুয়া খেলার আসর: গাবতলি, সায়েদাবাদ, সদরঘাট, মাওয়া, আরিচা ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে প্রকাশ্যে তাস বা লুডু খেলার আসর বসতে পারে। কৌতূহলী হয়েও এর আশেপাশে যাবেন না, কাছে গেলেই আর্থিক প্রতারণার শিকার হতে পারেন।

৬. অপরিচিতদের সাথে দূরত্ব: অপরিচিত স্থানে বা যাত্রাপথে অচেনা কারও সাথে অযথা আলাপ করা বা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করা থেকে বিরত থাকুন। সর্বদা সতর্ক ও সজাগ থাকুন।

৭. রেল ছাদের ঝুঁকি: ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদের উপর সক্রিয় ছিনতাইকারী চক্রের কবলে পড়ে মূল্যবান জিনিস হারানোর পাশাপাশি চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটতে পারে।

৮. লঞ্চে যাত্রী কম থাকলে: লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা খুব কম থাকলে সেই লঞ্চে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। নিরাপত্তাজনিত কারণে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

৯. স্পিডবোটে ছিনতাইয়ের সতর্কতা: স্পিডবোটে ভ্রমণকারীরা বিশেষ সতর্ক থাকবেন। মাঝনদীতে স্পিডবোট থামিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। মূল্যবান জিনিসপত্র সাথে না রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

১০. রাস্তা পারাপারে সতর্কতা: বাসের মাঝখান দিয়ে হেঁটে রাস্তা পার হওয়া খুবই বিপজ্জনক। বিশেষ করে নেশাগ্রস্ত দুষ্কৃতকারীরা এই সুযোগে অতর্কিতে হামলা বা ছিনতাই করতে ওঁত পেতে থাকে।

সারসংক্ষেপ:

ঢাকায় পথচলা ও ভ্রমণের সময় সামান্য অসতর্কতাও বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপরিচিতদের সাথে যেকোনো ধরনের যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে চলুন। সচেতনতা ছড়িয়ে দিয়ে নিজে সুরক্ষিত থাকুন এবং অন্যদেরও সুরক্ষিত থাকতে সাহায্য করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button