অপরাধআইন ও বিচারদেশপ্রশাসনবাংলাদেশমিডিয়া

জমি নিয়ে বিরোধ: পলাশবাড়ীতে হামলায় বাদীর স্বামীর ৩ আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন, আতঙ্কে পরিবার ঘরছাড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর এলাকার ছোট শিমুলতলা গ্রামে জমি সংক্রান্ত মামলা ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও জখমের ঘটনা ঘটেছে। বিবাদীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মামলার বাদী জাহানারা বেগমের স্বামী আব্দুল রহমানের বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে অভিযুক্তদের ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি বসতভিটা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পালিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে পরিবারটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আঙ্গুল হারানো আব্দুল রহমানের পুত্রবধূ জোসনা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, একই গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মো. আলমগীর (৩০) ও মো. আসাদুল (৪০) গংদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং মামলা-মোকদ্দমা চলছিল। এরই জের ধরে গত ২৯/০৬/২০২৫ ইং তারিখ সকালে বিবাদীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও জিনিসপত্র লুটপাট করে। এই ঘটনায় পলাশবাড়ী থানায় একটি মামলা (মামলা নং- ৩৬, জিআর নং-৫৯/২৫ তারিখ- ২৯/০৬/২৫ ইং) দায়ের করা হয়।

জোসনা বেগম আরও জানান, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সকল আসামি অজ্ঞাতনামা আরও কিছু লোকজনকে সাথে নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ০৮/১১/২০২৫ ইং তারিখে আবারও হামলা চালায়। ঐ দিন সকালে ধারালো ছোঁরা, হাসুয়া, কুড়াল, দা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে দ্বিতীয় দফায় তাদের বসতবাড়িতে হামলা করে। এসময় তারা পরিবারের সবাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই হামলায় বাধা দিতে গেলে আসামিরা হাসুয়া দিয়ে আব্দুল রহমানের বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এই ভয়াবহ ঘটনায় জাহানারা বেগম বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে পলাশবাড়ী থানায় আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে আসামিদের অব্যাহত হুমকির মুখে পরিবারটি বসতভিটায় ফিরতে পারছে না।

এদিকে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ভুক্তভোগী জাহানারা বেগম গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button