দেশপ্রশাসনবাংলাদেশবিশ্ববিশ্লেষণমিডিয়ারাজনীতি

ভারত কি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করবে?

মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু ভারতকে হস্তান্তর না করার ইঙ্গিত ভারতীয় বিশেষজ্ঞের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির আদেশ দেওয়ার পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—ভারত পলাতক এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে কি না।

আল জাজিরা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশীয় স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে (শেখ হাসিনা) প্রত্যর্পণ করবে না।

অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, “গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো অবস্থানে নেই এবং অনেক সময় তা ভঙ্গুরও হয়ে পড়েছে।” তিনি আরও মনে করেন, হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রত্যাশিত ছিল।

ভারতীয় এই বিশেষজ্ঞের মতে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেই পরিচালিত হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, “দেশটির পরিস্থিতি দেখেছে সবাই। সবার আশা ছিল, তার (শেখ হাসিনা) বেশ কঠোর বিচার হবে।”

অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, “নিরস্ত্র ছাত্রদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারও সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন) যে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার প্রমাণ আছে।” তিনি আরও যোগ করেন যে, “আওয়ামী লীগ একটি পাল্টা বর্ণনা তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিদের বিশ্বাস, হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। মামলার দুই নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ে আদালত বলেন, শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। একইসঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। তবে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তার অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ হলেও সত্য উন্মোচন করার কারণে তা কম হবে।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button