
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দ এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। আজ দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত এই সভায় সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোট (সিআইও)-এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
আলোচনায় বিএনপি-র পক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। উভয় পক্ষের মধ্যে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে নির্বাচন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং জোট গঠনের বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী, যারা নিজেদের ইসলামী দল হিসেবে পরিচয় দেয়, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোট সহ দেশের সকল আলেম-ওলামা এবং দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ তাদের এই চক্রান্ত রুখে দিতে ব্যাপক উদ্যোগ নেবেন।
মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপচেষ্টাকারীদের দেশে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে নেওয়া অপরিহার্য। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়, তবে বাংলাদেশ গভীর সংকটে নিপতিত হবে। ফখরুল সাহেব বলেন, জনগণের সাথে নিয়ে যেকোনো মূল্যে নির্বাচন বানচাল করতে চাওয়া গোষ্ঠীর ‘বিষ দাঁত ভেঙে দিতে হবে’। তিনি আরও জানান, সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোট তাঁদের সাথে একাত্মতা পোষণ করলে তাঁরা একসাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।
সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান তাঁর বক্তব্যে বিএনপিকে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, “বিগত ১৭ বছর ধরে আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, এবং আমরা আপনাদের সমর্থন ও সাহস যুগিয়েছি।”
তিনি একটি নির্দিষ্ট নামধারী ইসলামী দলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “তারা দেশ, স্বাধীনতা ও ইসলাম-বিরোধী। এই দলটি ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান বিরোধী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিরোধী ছিল এবং গণহত্যাসহ সমস্ত ফৌজদারি অপরাধের সাথে জড়িত ছিল।” তিনি তাদের ‘নামধারী মুসলমান’ এবং ‘মুনাফিক’ আখ্যা দেন, যারা কখনোই দেশের পক্ষে কাজ করতে পারে না।
অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান বিএনপিকে সঠিকভাবে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনগণের কাছে এই নামধারী গোষ্ঠীর অতীত ইতিহাস পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, সিআইও আগেও এদের চরিত্র উন্মোচনের চেষ্টা করেছে এবং ভবিষ্যতেও ব্যাপকভাবে প্রচারণার মাধ্যমে এই মুনাফিকদের চরিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরবে।
সভায় সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে আরও বক্তব্য রাখেন মহাসচিব মাওলানা হারিছুল হক এবং কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি রফিকুল ইসলাম, ইসলামিক লিবারেল পার্টির চেয়ারম্যান মুফতি ফরিদ উদ্দিন কাসেমী, খেলাফতের দাওয়াতে ইসলামীর চেয়ারম্যান মুফতি মিসবাউল হক এবং ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব মাওলানা জুবায়ের হোসাইন প্রমুখ।



