ভূমিকম্প আল্লাহর সতর্কবার্তা: রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ ও করণীয়
ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: ইসলামি আকিদা অনুযায়ী, ভূমিকম্প কেবল একটি ভৌগোলিক বা প্রাকৃতিক ঘটনা নয়; বরং এটি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক কঠোর হুঁশিয়ারি। দুনিয়ার বুকে যখন পাপাচার বেড়ে যায়, তখন আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সতর্ক করতে এবং সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাঠান। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে মহান রবের কাছে আত্মসমর্পণ এবং বিশেষ আমল করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
ভূমিকম্প বা বড় কোনো দুর্যোগ দেখা দিলে রাসুলুল্লাহ (সা.) কী করতেন, সে সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস পাওয়া যায়। জামে তিরমিজি শরিফে বর্ণিত ওই হাদিসে তিনি বলেন, যখন ভূমিকম্প সংঘটিত হতো, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা ও ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।
এ সময় তিনি বলতেন:
“হে আল্লাহ! আমাদের নিরাপদ রাখুন এবং আমাদের ক্ষমা করুন।”
হাদিসে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কম্পন বা দুর্যোগের সময় নবীজি (সা.) অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করতেন।
বুখারি ও মুসলিম শরিফের বর্ণনায় (ভাবার্থ) এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ভূমিকম্প ও বিভিন্ন বালা-মুসিবতকে আল্লাহর আজাব বা অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি উম্মতকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, “নিশ্চয়ই ভূমিকম্প ও দুর্যোগসমূহ আল্লাহর আজাবের অংশ। সুতরাং (এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে) তোমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাও এবং তাঁর কাছে তওবা করো।”
হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মুমিনের দায়িত্ব হলো—
১. ঘটনাটিকে নিছক প্রকৃতির খেয়াল না ভেবে আল্লাহর সতর্কবার্তা হিসেবে গ্রহণ করা।
২. অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করা এবং বিগত জীবনের গুনাহের জন্য লজ্জিত হওয়া।
৩. বিপদের মুহূর্তে বেশি বেশি তওবা, ইস্তেগফার এবং নেক আমল করা।
ইসলামি স্কলারদের মতে, দুর্যোগের সময় আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইলে এবং সদকা করলে বিপদ কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।



