ভূমিকম্পে আতঙ্ক নয়: ইস্তেগফার ও মানসিক প্রস্তুতিই আসল রক্ষাকবচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভূমিকম্পের মতো আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জানমালের সর্বোচ্চ ঝুঁকি হলো মৃত্যু। তাই এই অনিবার্য সত্যকে মেনে নিয়ে কেবল বাহ্যিক ব্যবস্থাপনা নয়, বরং আত্মিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় অযথা আতঙ্কিত না হয়ে, জিহ্বাকে সংযত রাখা এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ও সচেতন মহলের প্রতিনিধিরা।
ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে বড় বাস্তবতা হলো প্রাণহানির আশঙ্কা। তাই এ সময় নশ্বর দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়াই হলো মুমিনের সর্বোত্তম প্রস্তুতি। এর জন্য সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী আমল হলো ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পাঠ করা। দুর্যোগের মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বা চিৎকার-চেঁচামেচি না করে, ক্রমাগত তওবা ও ইস্তেগফার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কম্পন চলাকালীন সময়টি অত্যন্ত মূল্যবান। এ সময় করণীয় হলো:
১. মুখে কোনো অনর্থক কথা না বলা।
২. শুধুমাত্র কাউকে উদ্ধার, নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া বা আশ্রয় নেওয়ার মতো জরুরি নির্দেশনামূলক কথা বলা।
৩. বাকি পুরো সময় মহান আল্লাহর জিকির বা ইস্তেগফারে মগ্ন থাকা।
নিজের মস্তিষ্ককে আগে থেকেই এই ‘থট ট্রেনিং’ বা মানসিক প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখতে হবে, যাতে বিপদের সময় শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঠিক আচরণ করতে পারে।
ভূমিকম্পের সময় বা পরপরই অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পরিচিতজনকে ফোন করতে শুরু করেন এবং ঘটনার বর্ণনা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একে ‘শয়তানের ধোঁকা’ বা সময়ের অপচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যস্ত হয়ে পড়ে, অন্যদিকে নিজের হাত ও মুখের সময় নষ্ট হয়।
এ ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো:
- কাউকে অযথা ফোন দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- খুব বেশি প্রয়োজন হলে ছোট টেক্সট মেসেজ (SMS) পাঠান।
- হাত ও মুখকে গল্প করার কাজে ব্যবহার না করে উদ্ধার ও নিরাপত্তার কাজে লাগান।
মনে রাখা জরুরি, মোবাইল ফোন বা প্রযুক্তি ছাড়াও অতীতে মানুষ ভূমিকম্প মোকাবিলা করেছে। তাই প্রযুক্তির ওপর নির্ভর না করে নিজের ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য এবং দোয়ার ওপর ভরসা রাখতে হবে। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করার পাশাপাশি, এই সচেতনতামূলক বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।



