
শাকিলা শারমিন :বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেছেন,শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনাকে কয়েকবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার বিচার হবে না। যদি কয়েক হাজারবার শেখ হাসিনার ফাঁসি হয়, তা-ও তার বিচার শেষ হবে না। আমি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছে, মামলা করেছে সে আদালতে।
আরও যারা গুমের শিকার হয়েছে তারা মামলা করেছে। জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে অসংখ্য যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় প্রত্যেকটি মামলার রায় হবে ফাঁসির রায়। কতবার ফাঁসি হবে শেখ হাসিনার? শেষ হবে না। শনিবার বিকালে উত্তরায় শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চে শোকরানা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘মুজিব এবং হাসিনার ইতিহাস বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। হত্যাযজ্ঞের রাজনীতি নামে অপরাজনীতি প্রণয়নের ইতিহাস। সাংবিধানিকভাবে গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। তাদের ক্ষমা নেই। এ দেশ থেকে আপনারা যত দিন পর্যন্ত আওয়ামী-বাকশালীর মূল উৎপাটন না করতে পারবেন, তত দিন পর্যন্ত এই স্বৈরাচার শাসনের প্রত্যাবর্তন ব্যবস্থার সম্ভাবনা থেকে যাবে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা, এই যে মহিমা সারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে আত্মদান করেছে, সকল মানুষেরই চেতনা। সকল মানুষেরই এই অর্জন। সুতরাং, কোনো একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে, তারা যদি এককভাবে জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার, ধারক, বাহক এবং দাবি করে, সেটা বাংলাদেশের জন্য শুভ পরিণতি নিয়ে আসবে না। তাদের জন্য তো না-ই।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে, যারা আত্মদান করেছে, রক্তদান করেছে—তাদের, শহীদদের পরিবারকে।’সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সবাই বক্তব্যে বলেছে, হাসিনা দেশত্যাগ করেছে। পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমি বলি, হাসিনার দেশ এটা কখনোই ছিল না। তারা এখানে কখনো রাজনীতি করেনি। এ দেশের মানুষ এবং গণতন্ত্রের পক্ষে মুজিব ও হাসিনা কখনো ভূমিকা রাখেনি। মুজিব ভূমিকা রেখেছিল এ দেশে একদলীয়, স্বৈরতন্ত্র, বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য, একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং নিজেকে একনায়ক হিসেবে ঘোষণা করাই তার স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে। হাসিনা সেই বাকশালেরই উত্তরসূরি।
হাসিনাও বাস্তবে বাকশাল এবং ওপরে গণতন্ত্রের মুখোশ, সাংবিধানিক শাসনতন্ত্রের নমুনা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। এটাই ছিল বাপ-বেটির মধ্যে ব্যবধান। কিন্তু দ্রব্য একই। সুতরাং, তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে তাদের ঘরবাড়ি। তাদের শেকড় যেখানে, তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা সেই ভাষাটা এখন প্রয়োগ করতে চাই সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশে মানুষ বুঝতে পেরেছে, শেখ হাসিনা নিজে প্রমাণ করেছে তিনি এখানকার মানুষ কখনোই ছিলেন না।
তারা এখানে রাজনীতি কখনোই করেননি। এ দেশের গণমানুষের চিন্তাচেতনা তো দূরের কথা, এ দেশের মাটি মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো দিন সম্পর্ক ছিল না।’সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চব্বিশে ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। কেউ কেউ বলে ৩৬ দিনে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, এই ৩৬ দিন অর্জন করার জন্য আমাদের ৩৬টা রক্তের সিঁড়ি পেরোতে হয়েছে।



