দেশনোয়াখালীমিডিয়ারাজনীতি

নোয়াখালী-৫ আসনে বিতর্কিত প্রার্থীর মনোনয়ন: কাফনের কাপড় পরে বিএনপির বিক্ষোভ

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট ও সদর আংশিক) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ফখরুল ইসলামের নাম আসায় স্থানীয় রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে একসময়ের জামায়াত নেতা এবং বিতর্কিত ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলামকে বেছে নেওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন দলটির বিক্ষুব্ধ কর্মীরা।

গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কবিরহাট বাজারে এই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ফখরুল ইসলাম কখনোই বিএনপির মূল ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। জানা যায়, ১৯৭৭ সালে সরকারি মুজিব কলেজে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী হিসেবে তিনি রাজনীতি শুরু করেন এবং ১৯৯০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। প্রবীণ বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন এবং উপজেলা কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন।

রাজনীতির বাইরেও তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তিনি বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এস আলমের অর্থ পাচার এবং সম্পদ রক্ষায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এছাড়া গত সেপ্টেম্বরে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার তিনি এজাহারভুক্ত আসামি, যার তদন্ত বর্তমানে চলমান।

সাম্প্রতিক এক বক্তৃতায় প্রয়াত জননেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে নিয়ে ফখরুল ইসলামের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য স্থানীয়দের মধ্যে আগুনের মতো ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এর মধ্যেই এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে, প্রায় ১০০ কোটি টাকার বিনিময়ে তিনি দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। সাধারণ মানুষ ও দলীয় কর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, দলের কোন নেতাকে ম্যানেজ করে তিনি এই মনোনয়ন বাগিয়ে নিলেন?

বিক্ষোভকারীরা জানান, দলের দুঃসময়ে যারা রাজপথে ছিলেন, তাদের বঞ্চিত করে এস আলমের ঘনিষ্ঠ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হলে তা ভোটের মাঠে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে। এ অবস্থায় দলের হাইকমান্ডের কাছে দ্রুত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button