অপরাধআইন ও বিচারদুর্নীতিপ্রতারনাপ্রশাসনবাংলাদেশমিডিয়া

সালমান এফ রহমানের ৩৬ বিঘা জমি ও ৫৪ কোটি টাকা ক্রোকের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুরে অবস্থিত তার ৩৬ বিঘা জমি ক্রোক (জব্দ) এবং ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত ৫৪ কোটি টাকার বেশি অর্থ অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (গতকাল) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ প্রদান করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আইএফআইসি ব্যাংকে সালমান এফ রহমানের একটি হিসাবে থাকা ৫৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার নামীয় গাজীপুরের ৩৬ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার আদালতে আসামির সম্পদ জব্দের আবেদনটি করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলার আসামিরা তাদের ব্যাংক হিসাবে থাকা অর্থ এবং স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর বা রূপান্তরের চেষ্টা করছেন। রাষ্ট্রীয় অর্থের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা জরুরি। আদালত শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন।

বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল মামলাটি দায়ের করে দুদক। মামলায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং সালমান এফ রহমানসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকিং বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেছেন। তারা ‘শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড’ নামক একটি নামসর্বস্ব কোম্পানি, যা মাত্র এক মাস আগে রেজিস্ট্রিকৃত হয়েছিল, তার নামে বন্ড ইস্যু করে ১০০০ কোটি টাকা তহবিল সংগ্রহ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো সিআইবি (CIB) রিপোর্ট যাচাই করা হয়নি এবং প্রস্তাবিত বন্ধকী সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়নি। জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে মাত্র ৮৭ কোটি টাকার জমিকে অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা মূল্য দেখানো হয়।

সংগৃহীত ১০০০ কোটি টাকার মধ্য থেকে ২০০ কোটি টাকা দিয়ে এফডিআর করা হয়। অবশিষ্ট ৮০০ কোটি টাকা বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। সন্দেহজনক লেনদেন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button