কদমতলীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ৯ কোটি টাকার জমি দখলের পাঁয়তারা: আদালতের রায়ও মানছেন না অভিযুক্ত
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর কদমতলী এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি জমি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাহনাজ পারভীন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তানভীর আহমেদ রবিনের বড় ভাই রাসেল আহম্মেদের নাম ব্যবহার করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ওই জমি দখলের জন্য স্থানীয়ভাবে ত্রাস সৃষ্টি করছে।
ভুক্তভোগী মো. মাসুদ হোসেন মুন্সি জানান, কদমতলী থানার স্মৃতিধারা ৮ নম্বর রোডের ৩২১ নম্বর হোল্ডিংয়ে তার ৪৫ শতাংশ জমি রয়েছে। দনিয়া মৌজার (৩৩৩) ঢাকা কালেক্টরীর ২৫৪ নং তৌজিভুক্ত সিএস ৩৯৮ নং দাগের এই জমিটির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৯ কোটি টাকা। জমির চৌহুদ্দি হিসেবে উত্তরে নির্মাণাধীন বাড়ি, দক্ষিণে ১৬৪৩১ দাগের রাস্তা, পূর্বে রাস্তা এবং পশ্চিমে ১৬৪২৪ দাগের জমি অবস্থিত।
মাসুদ হোসেনের অভিযোগ, উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকার মৃত মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের মেয়ে শাহনাজ পারভীন দীর্ঘদিন ধরে এই জমিটি হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি স্থানীয় কবির, ছগির, মান্নান, আবুল হোসেন মুন্সী ও রং মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন সন্ত্রাসীকে ব্যবহার করে নিয়মিত ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভুক্তভোগী মাসুদ হোসেন কদমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এছাড়া বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নং-৩) হাসান মো. হাফিজুর রহমান নথিপত্র পর্যালোচনা ও সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মাসুদ হোসেনের পক্ষে রায় দেন। সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, জমিটি কেয়ারটেকারের মাধ্যমে মাসুদ হোসেন মুন্সির ভোগদখলে রয়েছে।
ভুক্তভোগী মাসুদ হোসেন মুন্সি বলেন, “আদালতের রায়ে হেরে গিয়ে এখন তারা গায়ের জোরে জমি দখলের চেষ্টা করছে। আমার বৈধভাবে কেনা সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। রাজনৈতিক দাপট দেখিয়ে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।”
ঘটনাস্থলে অবস্থিত একটি গ্যারেজের মালিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জনি বলেন, “আমি গত দুই বছর ধরে প্রকৃত মালিক মাসুদ হোসেন মুন্সির কাছ থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে গ্যারেজ পরিচালনা করছি। কিন্তু শাহনাজ পারভীন (ছায়ামনি) ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে নিরীহ মাসুদ সাহেবকে হয়রানি করছেন এবং জোরপূর্বক জমিটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।”
রাজনৈতিক নাম ভাঙিয়ে এমন দখলদারিত্বের ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারে। তারা অবিলম্বে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে ভুক্তভোগী তার সম্পত্তির নিরাপত্তা পান এবং এলাকায় শান্তি বজায় থাকে।



