ঘুমানোর আগে যে ৫টি আমল করার উপদেশ দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)
ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: নন্দিন জীবনে মুমিনের প্রতিটি কাজই ইবাদত, যদি তা সুন্নাহ মেনে করা হয়। রাতের বেলা ঘুমানোর আগেও রয়েছে বিশেষ কিছু আমল, যা স্বল্প সময়ে অশেষ সওয়াব এনে দিতে পারে। হাদিসে বর্ণিত একটি ঘটনায় হযরত আলী (রা.)-কে দেওয়া বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কিছু বিশেষ উপদেশের কথা জানা যায়।
একদা মহানবী (সা.) হযরত আলী (রা.)-কে লক্ষ্য করে বলেন, “হে আলী! পাঁচটি কাজ সম্পন্ন না করে রাতে ঘুমাতে যেও না।” কাজগুলো হলো—
১. চার হাজার দিনার সদকা করা।
২. পবিত্র কুরআন একবার খতম করা।
৩. জান্নাতের মূল্য পরিশোধ করা।
৪. বিবাদে লিপ্ত দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া।
৫. একবার পবিত্র হজ পালন করা।
নবীজির মুখে এত বড় সব আমলের কথা শুনে হযরত আলী (রা.) বিস্মিত হয়ে পড়েন। তিনি বিনীতভাবে জানতে চান, “হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! এত অল্প সময়ে এই বিশাল ও কঠিন কাজগুলো করা আমার পক্ষে কীভাবে সম্ভব?”
উত্তরে মহানবী (সা.) মুচকি হেসে অত্যন্ত সহজ পাঁচটি আমলের কথা বলে দেন, যা পালন করলে ওই বড় কাজগুলোর সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। আমলগুলো হলো:
১. সূরা ফাতিহা ৪ বার পাঠ করা: নবীজি (সা.) জানান, ঘুমানোর আগে ৪ বার সূরা ফাতিহা পাঠ করলে ৪ হাজার দিনার সদকা করার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়।
২. সূরা ইখলাস ৩ বার পাঠ করা: তিনি বলেন, ৩ বার সূরা ইখলাস (কুল হুয়াল্লাহু আহাদ…) পাঠ করলে পূর্ণ এক খতম কুরআন পড়ার সওয়াব আমলনামায় যুক্ত হবে।
৩. দরুদ শরীফ ৩ বার পাঠ করা: জান্নাতের মূল্য পরিশোধের উপায় হিসেবে তিনি যেকোনো দরুদ শরীফ ৩ বার পাঠ করতে বলেন। সবচেয়ে ছোট দরুদ হলো—‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’।
৪. ইস্তিগফার ১০ বার পাঠ করা: মহানবী (সা.) বলেন, আস্তাগফিরুল্লাহ বা যেকোনো ইস্তিগফার ১০ বার পাঠ করলে দুজন রাগান্বিত বা বিবাদমান ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
৫. কালেমা শাহাদাত ৪ বার পাঠ করা: সবশেষে তিনি বলেন, ঘুমানোর আগে ৪ বার কালেমা শাহাদাত পাঠ করলে একটি কবুল হজ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে হাদিসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ—সহিহ বুখারি, মুসলিম, মিশকাত ও জামে তিরমিজিতে আলোচনা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই সহজ ও ফজিলতপূর্ণ আমলগুলো করার তৌফিক দান করুন। আমিন।



