জীবনের ১৮ বছরে ১ লাখ ১১ হাজার রাকাত সালাত: আপনি কি প্রস্তুত হিসাব দিতে?
ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: সালাত বা নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। পরকালে বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। কিন্তু দুনিয়ার ব্যস্ততায় ডুবে থেকে আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, আমাদের জীবনের কতগুলো ওয়াক্ত বা কত রাকাত নামাজ কাজা হয়েছে? একটি সাধারণ গাণিতিক হিসাব কষলেই বেরিয়ে আসে চমকে ওঠার মতো তথ্য।
ধরা যাক, একজন ব্যক্তির বর্তমান বয়স ৩০ বছর। ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী, সাধারণত ১২ বছর বয়স থেকে তার ওপর নামাজ ফরজ হয়েছে। সেই হিসেবে, গত ১৮ বছর ধরে (৩০ – ১২ = ১৮) তার ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ ছিল।
গাণিতিক হিসাবে দেখা যায়, ১৮ বছরে মোট দিনের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৭০ (১৮ বছর × ৩৬৫ দিন)। প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ওপর প্রতিদিন ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা আবশ্যক। এই ১৭ রাকাতের বিন্যাস হলো—ফজর ২ রাকাত, জোহর ৪ রাকাত, আসর ৪ রাকাত, মাগরিব ৩ রাকাত এবং এশা ৪ রাকাত।
পরিসংখ্যান বলছে, এই দীর্ঘ ১৮ বছরে একজন ব্যক্তির আদায় করার কথা ছিল মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯০ রাকাত ফরজ সালাত (৬,৫৭০ দিন × ১৭ রাকাত)। এটি একটি বিশাল সংখ্যা।
এখন আত্মজিজ্ঞাসার পালা। যদি এই ১৮ বছরের মধ্যে কেউ মাত্র ৭ দিনও নামাজ না পড়ে থাকেন, তবে তার কাজা নামাজের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৯ রাকাত (৭ দিন × ১৭ রাকাত)। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেকের জীবনে নামাজ না পড়ার দিন বা ওয়াক্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, যত রাকাত নামাজ আদায় করা হয়নি, তার প্রতিটি ওয়াক্তের জন্য পরকালে কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। সেই বিশাল ঘাটতি আর শাস্তির কথা চিন্তা করে প্রতিটি মুমিনের এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অতীতে যা ভুল হয়েছে, তার জন্য মহান আল্লাহর কাছে তওবা করে এবং ভবিষ্যতে সালাতের প্রতি যত্নবান হয়েই কেবল পরকালের কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সালাতের প্রতি স্থিরতা ও নিয়মিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।



