ইসলাম ধর্ম

কিয়ামতের দিন আল্লাহর দয়াই চূড়ান্ত সফলতার চাবিকাঠি

ধর্ম ডেস্ক: পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা পরকালের বিচার দিবসের ভয়াবহতা এবং সেখান থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন। সূরা আল-আনআমের ১৬ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘‘সেদিন যে শাস্তি থেকে বেঁচে যাবে, তা হবে তার ওপর আল্লাহর বড় দয়া। আর সেটাই হবে স্পষ্ট সফলতা।’’

এখানে ‘সেদিন’ বলতে হাশরের ময়দান বা কিয়ামতের সেই কঠিন মুহূর্তকে বোঝানো হয়েছে। মানুষ হিসেবে দুনিয়ার জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত ভুল-ত্রুটি, পাপ ও পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত থাকি। কেবল নিজেদের আমল বা কর্ম দিয়ে পরকালের সেই কঠিন বিচার থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ। এমতাবস্থায় মহান রবের অসীম রহমত, দয়া ও ক্ষমাই হবে বান্দার একমাত্র ভরসাস্থল। আখেরাতে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করে অফুরন্ত নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারাই মুমিনের জন্য পরম সৌভাগ্যের বিষয়।

পরকালের প্রকৃত সফলতা কী, তা পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। সূরা আলে ইমরানের ১৮৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘‘প্রত্যেক প্রাণিকেই মরতে হবে এবং তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন যার যার পুরস্কার পাবে। সেখানে যারা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে যাবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হবে তারাই আসলে কামিয়াব।’’

জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীদের মর্যাদার পার্থক্য টেনে সূরা হাশরের ২০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘‘জাহান্নামবাসী ও জান্নাতবাসী এক সমান হতে পারে না। আসলে জান্নাতবাসীরাই সফলকাম।’’

অন্যদিকে, মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের শান্তির পথে আহ্বান করছেন। সূরা ইউনুসের ২৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘‘আল্লাহ ‘দারুসসালাম’ বা শান্তির আবাসের দিকে ডাকেন, আর যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।’’ জান্নাতের সুখ-শান্তি প্রসঙ্গে মুসলিম শরীফের একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, সে পরিতৃপ্ত হয়ে যাবে, কখনো আশাহত হবে না।

তাই উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসের মর্মার্থ গভীরভাবে অনুধাবন করা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য। প্রজ্ঞাময় আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা অন্তরে ধারণ করে এবং তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রেখে আমাদের সাধ্যমতো নেক আমল করে যেতে হবে। তবেই ইনশাআল্লাহ পরকালে চূড়ান্ত সফলতা বা জান্নাত লাভ সম্ভব হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button