নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারী শহিদ ও যোদ্ধাদের নির্বাচনের আগেই ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা করে সরকারি গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন জ্ঞানভিত্তিক সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক এম এ বার্ণিক। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নির্বাচনের পরে ক্ষমতায় আসা কোনো সরকারই হয়তো এই শহিদদের যথাযথ মূল্যায়ন করবে না। তাই কালক্ষেপণ না করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অধ্যাপক এম এ বার্ণিক এই দাবি জানান। বিবৃতিতে তিনি জুলাই জাতীয় সনদে গণ-অভ্যুত্থান প্রসঙ্গটি যথাযথ গুরুত্ব না পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক বার্ণিক বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদে যেভাবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে অবহেলা করা হয়েছে, তা জাতির জন্য অপমানজনক। ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই শহিদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। অথচ সেই শহিদ ও যোদ্ধাদের এখনো রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় বীর’ এর স্বীকৃতি না দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।’
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের আয়োজন চলছে, কিন্তু যাদের আত্মত্যাগে এই নির্বাচনের পথ তৈরি হলো, তাদের স্বীকৃতি দিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, নির্বাচনের পর কোনো দলীয় সরকারই সাধারণত গণ-অভ্যুত্থানের নায়কদের প্রাপ্য সম্মান দিতে চায় না। সময়ের স্রোতে জুলাই-আগস্টের রক্তভেজা স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা হতে পারে। তাই নির্বাচনের আগেই—বরং এখনই—জুলাই শহিদ ও যোদ্ধাদের জাতীয় বীর ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশকে নতুন স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছেন, তাদের স্বীকৃতি না দেওয়া মানে জাতির অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা। এই স্বীকৃতি কোনো রাজনৈতিক করুণা নয়, বরং এটি জাতির দায়বদ্ধতা।
অধ্যাপক বার্ণিক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাষ্ট্র যদি এখনই এই শহিদদের স্বপ্নের মূল্যায়ন না করে এবং তাদের বীরত্বকে গেজেটভুক্ত না করে, তবে ইতিহাস এই ব্যর্থতাকে ক্ষমা করবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই অবহেলা লজ্জাজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তাই অনতিবিলম্বে শহিদদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দিয়ে গেজেট প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।



