চট্টগ্রামজনদুর্ভোগদুর্নীতিদেশ

আনোয়ারায় সিইউএফএল সড়কের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা যানজটে নাকাল শিল্পাঞ্চলের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত সিইউএফএল সড়কটি এই অঞ্চলের ‘লাইফলাইন’ হিসেবে পরিচিত। কেইপিজেড, সিইউএফএল, কাফকো, মেরিন একাডেমিসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পণ্যবাহী যান চলাচলের প্রধান মাধ্যম এই সড়ক। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির দুই পাশের অধিগ্রহণকৃত সরকারি জায়গা এখন অবৈধ দখলদারদের কবলে। ফলে নিত্যদিন তীব্র যানজট ও চরম জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশের সরকারি জায়গা দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল অবৈধ দোকানপাট, ঘরবাড়ি ও অস্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব দখলদাররা অনেকটা স্বঘোষিত ‘জমিদার’-এর মতো আচরণ করছে। তারা অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাড়া দিয়ে মাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে তারা ‘ব্যবসায়ী সমিতি’র নাম ব্যবহার করে নানামুখী চাপ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ায় প্রতিদিন চাতরী চৌমুহনী এলাকাসহ পুরো সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পথচারীদের হাঁটার জন্যও ফুটপাতে কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই। এতে শুধু সাধারণ যাত্রীই নয়, শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক ও মালবাহী যানের চালকরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সম্প্রতি সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে। এতে সড়কটি প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়নের সুযোগ সৃষ্টি হলেও প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই অবৈধ দখলদারিত্ব। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, অধিগ্রহণকৃত জায়গা দ্রুত সওজ-এর আয়ত্তে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হোক।

এ বিষয়ে সিইউএফএল-এর ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম লাভলু বলেন, “আমরা সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। দাপ্তরিক কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে, যার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

অন্যদিকে, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের (দক্ষিণ) নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা। তিনি বলেন, “সড়কের পাশে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। খুব শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে সড়কটি সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করা হবে, যাতে এটি যানজটমুক্ত ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার উপযোগী হয়ে ওঠে।”

স্থানীয় ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিকরা আশা করছেন, প্রশাসনের আশ্বাসের দ্রুত বাস্তবায়ন হবে এবং প্রভাবশালী দখলদারদের দৌরাত্ম্য থামিয়ে সড়কটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button